ভিআইপি সড়কের এই হাল!

>
পটুয়াখালীর গলাচিপা পৌরসভার ভিআইপি সড়ক বেহাল। সংস্কারের অভাবে সড়কটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ছবিটি গত বৃহস্পতিবার তোলা l প্রথম আলো
পটুয়াখালীর গলাচিপা পৌরসভার ভিআইপি সড়ক বেহাল। সংস্কারের অভাবে সড়কটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ছবিটি গত বৃহস্পতিবার তোলা l প্রথম আলো
দেশের বিভিন্ন জেলায় সড়কগুলো বেহাল হয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও নির্মাণের অল্প দিনের মধ্যেই পিচ–খোয়া উঠে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে গর্তের। কোথাও সড়ক ধসে পড়েছে। এসব সড়ক নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন

পটুয়াখালীর গলাচিপা পৌরসভার ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যের ভিআইপি সড়ক সংস্কার হয়নি প্রায় ১০ বছরেও। এ সড়কের নানা অংশের ঢালাই উঠে গেছে। খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

এদিকে কার্যাদেশের ১৪ মাস পার হলেও উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কের সংস্কারকাজ শেষ হয়নি। এ কারণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে কাজ করতে আসা লোকজনকে নানা ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
পৌরসভা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের সেপ্টেম্বরে উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কের ৬৯৫ মিটার অংশের কার্পেটিংয়ের কাজ করার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে কোস্টাল টাউন এনভায়রনমেন্টাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রজেক্টের (সিটিইআইপি) আওতায় ২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই বছরের ১ নভেম্বর এনএম এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘এক বছর ধরে সড়কটি ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে আছে। কী কারণে যে সংস্কারকাজ শেষ করা হচ্ছে না তা আমরা জানতেও পারছি না। এ সড়ক দিয়ে বড় কোনো গাড়ি চলাচল সম্ভব হচ্ছে না।’
এনএম এন্টারপ্রাইজের স্থানীয় প্রতিনিধি আবদুল মান্নান বলেন, সড়কটি প্রশস্ত করার জন্য বিদ্যুতের খাম্বা সরানো দরকার। নির্ধারিত টাকা জমা দেওয়ার পরও পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি খাম্বাগুলো সরিয়ে দিচ্ছে না। তাই সংস্কারকাজ শেষ করা যাচ্ছে না।
পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘কার্যাদেশের শর্ত অনুযায়ী, এ সড়কের সংস্কারকাজ নভেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কাজ শেষ না হওয়ায় আমরা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কয়েক দফায় সতর্কও করেছি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি বিদ্যুতের খাম্বা সরানোর জন্য টাকা জমা দিতে দেরি করায় নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তী সময়ে কাজটি শেষ করার জন্য আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।’
মীর আবদুল জলিল নামের আরেকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ১২ বছর আগে ভিআইপি সড়কের নামে মাত্র সংস্কারকাজ হয়। এর দুই বছরের মাথায় আবার সড়কটি ভেঙে যায়। কয়েক বছর ধরে সড়কটি ব্যবহারের পুরোপুরি অনুপযোগী হয়ে আছে। এ সড়কে রিকশা নিয়ে যাওয়াও সম্ভব হয় না।
ভিআইপি সড়কের সংস্কার প্রসঙ্গে নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সিটিইআইপির দ্বিতীয় বা তৃতীয় দফার বরাদ্দে সড়কটি সংস্কারের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এ বরাদ্দ পেতে অনেক দেরি হবে। সে ক্ষেত্রে পৌরসভার নিজস্ব অর্থায়নে সড়কটির কাজ করা যেতে পারে।
পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি সংস্কার হচ্ছে না। আমরা পৌরসভার পরবর্তী মাসিক সভায় ভিআইপি সড়কের ব্যাপারে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। চেষ্টা করা হবে যাতে পৌরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে এ সড়কের সংস্কারকাজ করা যায়।’