ধারণক্ষমতার তিন গুণ বন্দী চট্টগ্রাম কারাগারে

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দীর ধারণক্ষমতা রয়েছে এক হাজার ৭০০ জন। বর্তমানে বন্দী রয়েছেন চার হাজার ৮৫০ জন। ধারণক্ষমতার চেয়ে বন্দীর সংখ্যা প্রায় তিন গুণ বেড়ে যাওয়ায় তাঁদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন কারা কর্তৃপক্ষ।
আইনজীবী ও কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হরতাল-অবরোধে আদালতের নিয়মিত কার্যক্রম বন্ধ থাকা এবং উচ্চ আদালত ও বিচারিক আদালত ডিসেম্বর মাসে অবকাশকালীন বন্ধ থাকার কারণে জামিন নিতে পারছেন না বন্দীরা। তার ওপর সাম্প্রতিক সময়ে বেড়ে গেছে নতুন বন্দী আগমনের সংখ্যা। সব মিলিয়ে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দীর সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় প্রায় তিন গুণ বেড়ে গেছে।
আটক বন্দীদের মধ্যে রয়েছেন হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, অস্ত্র, মাদক, বিস্ফোরক ও নারী নির্যাতন মামলার আসামি। রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপি নেতা মীর মোহাম্মদ নাছিরউদ্দিন ও গোলাম আকবর খন্দকারের মতো ভিআইপি আসামি। ফাঁসির আসামি রয়েছেন ৪৫ জন। দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী রয়েছেন ৫০ জনের বেশি। বিএনপিও জামায়াতের নেতা-কর্মী রয়েছেন প্রায় ৫০০ জন।
সূত্র জানায়, এক হাজার ৭০০ জন বন্দীর পাহারা ও নিরাপত্তার জন্য যে লোকবল রয়েছে তাঁদের দিয়েই তিন গুণ বেশি বন্দীকে পাহারা দিতে হচ্ছে। ফলে বাড়তি বন্দীদের পাহারা দেওয়া, তাঁদের থাকা ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন কারা কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হরতাল-অবরোধ না থাকলে প্রতিদিন গড়ে ৬০ থেকে ৭০ জন আসামি জামিনে মুক্তি পান। এখন হরতাল-অবরোধের সঙ্গে অবকাশকালীন বন্ধের কারণে আদালত বন্ধ থাকায় জামিন নিতে পারছেন না বন্দীরা। বিশেষ ব্যবস্থায় আদালত বসলেও হরতাল-অবরোধের কারণে আইনজীবীর অনুপস্থিতি, আদালতে হাজির হতে বিলম্বসহ নানা কারণে বন্দীদের স্বজনেরা আইনি দৌড়ঝাঁপ করতে পারেন না। ফলে জামিনযোগ্য মামলায় আটক হয়েও জামিন নিতে পারছেন না অনেক বন্দী।
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডিসেম্বর মাসে অবকাশকালীন বন্ধ থাকে আদালত। এ কারণে জামিনের হারও থাকে কম। এ ছাড়া, হরতালে চট্টগ্রাম বারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হরতালের সময় কোনো আদালত বসেন না।’
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক মো. ছগির মিয়া বলেন, ‘ধারণক্ষমতার তিন গুণ বন্দী রয়েছে কারাগারে। অন্য সময়ের তুলনায় প্রায় ২০ দিন ধরে বন্দীদের জামিনের হার কমে গেছে। ফলে বন্দীর সংখ্যা বাড়ছে।’