রেলসেতুর স্লিপার রক্ষায় বাঁশ!

কুলাউড়ার মনু রেলসেতুতে রেললাইনের স্লিপারের সঙ্গে  লাগানো বাঁশ l প্রথম আলো
কুলাউড়ার মনু রেলসেতুতে রেললাইনের স্লিপারের সঙ্গে লাগানো বাঁশ l প্রথম আলো

সিলেট-আখাউড়া রেলপথের মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ২০৬ নম্বর মনু রেলসেতুর কাঠের অর্ধেক স্লিপার নষ্ট হয়ে গছে। স্থানচ্যুত না হতে স্লিপারের ওপর ফালি করা বাঁশ স্থাপন করে পেরেক ঠুকে রাখা হয়েছে। এ অবস্থায় ট্রেন চলাচলের সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, মনু নদের ওপর প্রায় ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুতে ২০৮টি স্লিপার রয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেক স্লিপার নষ্ট। সেতুটির ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করে। সেতুটি সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার (কি পয়েন্ট ইনস্টলেশন বা কেপিআই) মধ্যে পড়েছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, মনু রেলস্টেশনের পাশ ঘেঁষেই সেতুটির অবস্থান। রেলওয়ের তিনজন কি-ম্যান (রক্ষণাবেক্ষণকর্মী) সেতুর ওপরে নাট-বল্টু লাগিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত স্লিপারের সঙ্গে নিচের গার্ডারের সংযোগ দেওয়ার কাজ করছেন। সেতুর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত স্লিপারে পেরেক ঠুকে বাঁশের ফালি লাগানো।
কাজে ব্যস্ত কি-ম্যান আবদুর রহমান বলেন, স্লিপারগুলো অনেক আগেই নষ্ট হয়ে গেছে। ট্রেন চলাচলের সময় ঝাঁকুনিতে নাট-বল্টু খুলে স্লিপারগুলো সরে যায়। দিনে দুই-তিনবার এসে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে হয়। কোথাও ত্রুটি থাকলে সারাতে হয়। স্লিপার যাতে স্থানচ্যুত না হয়, সে জন্য ফালি করা বাঁশ দিয়ে স্লিপারগুলো আটকে রাখা হয়েছে।
কুলাউড়া লোকোশেডের ট্রেনচালক নাজমুল হক বলেন, ট্রেন চালানোর সময় রেললাইনের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা তাঁদের পক্ষে সম্ভব হয় না। কোনো কারণে স্লিপার স্থানচ্যুত হয়ে রেললাইন সরে গেলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
হবিগঞ্জের লস্করপুর থেকে কুলাউড়ার টিলাগাঁও রেলস্টেশন পর্যন্ত এলাকায় দায়িত্বে থাকা রেলওয়ের শ্রীমঙ্গল কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী আলী আজম বলেন, মনু রেলসেতুটি নিয়ে তাঁরা চিন্তিত। ওই এলাকায় একজন কি-ম্যান সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে থাকেন।
রেলওয়ের সিলেট কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মুজিবুর রহমান গতকাল শুক্রবার বলেন, কাঠের সংকটের কারণে নতুন স্লিপার স্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে পরবর্তী দুই বছরের মধ্যেই সেখানে পুরোনো স্লিপার বদলে নতুন স্লিপার স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রে কোনো ঝুঁকি নেই বলে তিনি দাবি করেন।