ঢালাই উঠে বেরিয়ে এসেছে খোয়া, রড

>
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ইব্রাহিমপুর-ডলুরা সড়কের বিভিন্ন স্থানে ঢালাই উঠে পাথর ও রড বেরিয়ে এসেছে। সম্প্রতি তোলা ছবি l প্রথম আলো
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ইব্রাহিমপুর-ডলুরা সড়কের বিভিন্ন স্থানে ঢালাই উঠে পাথর ও রড বেরিয়ে এসেছে। সম্প্রতি তোলা ছবি l প্রথম আলো
দেশের বিভিন্ন জেলায় সড়কগুলো বেহাল হয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও নির্মাণের অল্প দিনের মধ্যেই পিচ–খোয়া উঠে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে গর্তের। কোথাও সড়ক ধসে পড়েছে। এসব সড়ক নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন

সুনামগঞ্জে ইব্রাহিমপুর-ডলুরা সড়ক প্রায় পাঁচ বছর ধরে সংস্কার করা হয় না। এর বেশির ভাগ অংশের ঢালাই উঠে গেছে। বেরিয়ে এসেছে খোয়া ও রড। সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় বহু গর্তের। ধুলাবালু উড়ছে। ফলে এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জ শহরতলির ইব্রাহিমপুর গ্রাম থেকে সীমান্তের ডলুরা পর্যন্ত সড়কের দূরত্ব প্রায় ১২ কিলোমিটার। এই সড়ক দিয়ে সদর উপজেলার সুরমা ও জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের নারায়ণতলা, ডলুরা, চৌমুহনী, ফেনিবিল, গোদিগাঁও, জর্জরিয়া, নয়দারগাঁও, রাজানগর, কৃষ্ণনগর, সাহেবনগর, মুসলিমপুর, উরারকান্দা, গুচ্ছগ্রাম, সৈয়দপুর, অক্ষয়নগর, ইব্রাহিমপুর, আমরপাড়া ও ঘাসিগাঁও গ্রামের মানুষ জেলা শহরে যাতায়াত করেন। আবার সময় কম লাগায় এই সড়ক দিয়ে ডলুরা এলাকার সীমান্ত হাট ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ এলাকায় যাতায়াত করেন জেলা শহরের লোকজন।
সৈয়দপুর গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা প্রথম আলোকে বলেন, ২০১১ সালে এই সড়কের ইব্রাহিমপুর থেকে জর্জরিয়া পর্যন্ত সংস্কারকাজ করা হয়। সংস্কারকাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার হয়। তখন এ বিষয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগও করা হয়েছিল। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। সংস্কারের এক বছরের মাথায় এ সড়ক আবার বেহাল হয়ে পড়ে। এ ছাড়া বর্ষা মৌসুমে এ সড়কের বেশ কিছু অংশ পানিতে তলিয়ে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখন সড়কের নানা স্থানে ছোট-বড় বহু গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে ঝুঁকি নিয়ে মোটরসাইকেল, লেগুনা ও টেম্পো চলাচল করছে।
৩১ ডিসেম্বর সরেজমিনে দেখা গেছে, ইব্রাহিমপুর থেকে জর্জরিয়া পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটারের অবস্থা বেশি খারাপ। অক্ষয়নগর গ্রামের পাশে সড়কের বেশ কিছু অংশের খোয়া বেরিয়ে এসেছে। সৈয়দপুর গ্রামের পাশের কিছু অংশ বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই স্থানে সড়ক বড় বেশি ভাঙাচোরা।
মুসলিমপুর গ্রামের বাসিন্দা আবদুল আহাদ বলেন, ‘সড়কটি তুলনামূলকভাবে নিচু। ছয় বছর আগে যখন সড়ক সংস্কার করা হয় তখন আমরা বলেছিলাম উঁচু করার জন্য। কিন্তু আমাদের কথা কেউ শোনেনি। এখন প্রতিবছর পানি এলে সড়ক তলিয়ে যায়।’
সৈয়দপুর গ্রামের ব্যবসায়ী নাদীর শাহ বলেন, তাঁদের এলাকায় সবজির চাষ হয় বেশি। সড়ক বেহাল থাকায় এসব সবজি জেলা শহরে নিয়ে যেতে চাষিরা চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
সৈয়দপুর মাধ্যমিক উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শামসুল ইসলাম বলেন, সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় এলাকার ১৫ থেকে ২০টি গ্রামের মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ-৪ আসনের (সদর ও বিশ্বম্ভরপুর) সাংসদ পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ বলেন, ‘আমি এই সড়ক সংস্কারের বিষয়ে কয়েকবার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা বলেছেন যত দ্রুত সম্ভব সড়কের সংস্কারকাজ করবেন।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহিম মিয়া বলেন, বন্যায় সড়কটি তলিয়ে গিয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সড়ক সংস্কারের জন্য এলজিইডির সদর দপ্তরে প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই কাজ হবে।