ইন্টারনেটের গতি ২০ জানুয়ারির আগে স্বাভাবিক হচ্ছে না

বাংলাদেশে ইন্টারনেটের গতি ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত ধীর থাকবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন (আইএসপি)। অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, আন্তর্জাতিক টেরিস্ট্রিয়াল কেব্ল (আইটিসি) অপারেটরদের ওপর নির্ভরশীল আইএসপি অপারেটরদের গ্রাহকেরা কয়েক দিন ধরে ইন্টারনেটের গতি নিয়ে সংকটে পড়েছেন। আইটিসিগুলো ব্যান্ডউইটথ আমদানি করে ভারত থেকে। বাংলাদেশের আইটিসিগুলোকে ব্যান্ডউইটথ সরবরাহকারী ভারতীয় এয়ারটেল ও টাটা ইনডিকমের কেব্ল কাটা পড়ায় এ সমস্যা হচ্ছে।
আইএসপি অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশে দৈনিক ইন্টারনেট ব্যবহারের পরিমাণ ৪০০ জিবিপিএস অতিক্রম করেছে। এই ৪০০ জিবিপিএসের মধ্যে ১২০ জিবিপিএস আসে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্ল কোম্পানির (বিএসসিসিএল) মাধ্যমে। বাকি ২৮০ জিবিপিএসের বেশি ইন্টারনেট ব্যান্ডউইটথ আন্তর্জাতিক টেরিস্ট্রিয়াল কেব্ল (আইটিসি) অপারেটরদের মাধ্যমে ভারত থেকে আসে। অর্থাৎ, মোট ব্যান্ডউইটথের ৭৫ শতাংশের বেশি ইন্টারনেট আইটিসি দিয়েই আসে।
আইএসপি অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, ভারতের আইটুআই সাবমেরিন টেলিকমিউনিকেশন কেব্ল, টাটা ইনডিকম কেব্ল (টিআইসি) ও ইন্ডিয়া-মধ্যপ্রাচ্য-পশ্চিম ইউরোপ ফাইবার অপটিক কেব্ল অকেজো থাকায় ভারত থেকে ইন্টারনেট পাওয়া যাচ্ছে না।
আইটুআই সাবমেরিন টেলিকমিউনিকেশন কেব্ল দিয়ে ভারত সিঙ্গাপুরের সঙ্গে যুক্ত। এর মালিক ভারতীয় এয়ারটেল লিমিটেড। এই কেব্লে আট জোড়া ফাইবার রয়েছে, যার মধ্য দিয়ে সেকেন্ডে ৮ দশমিক ৪ টেরাবাইট ব্যান্ডউইটথ সঞ্চালন সম্ভব। কিন্তু চেন্নাইয়ের সমুদ্রতীর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে কেব্লটি কাটা পড়ার কারণে গত ১৩ ডিসেম্বর রাত দুইটা থেকে সেটি অকেজো রয়েছে।
টাটা ইনডিকম কেব্ল (টিআইসি) দিয়েও সিঙ্গাপুরের সঙ্গে ভারত সংযুক্ত রয়েছে। এটি সেকেন্ডে ৫ দশমিক ১২ টেরাবাইট ব্যান্ডউইটথ পরিবহনে সক্ষম। ৪ জানুয়ারি রাত একটা থেকে এই কেব্লটিও অকেজো রয়েছে।
ইন্ডিয়া-মধ্যপ্রাচ্য-পশ্চিম ইউরোপ নামের আরেকটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ফাইবার অপটিক কেব্ল দ্বারা ভারত মধ্যপ্রাচ্যের মধ্য দিয়ে ইউরোপের সঙ্গে যুক্ত। এই কেব্লটিও এখন অকেজো। ফলে বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা ইন্টারনেটের ধীরগতি পাচ্ছেন।
আইএসপি অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, ইন্ডিয়া-মধ্যপ্রাচ্য-পশ্চিম ইউরোপ কেব্ল এ সপ্তাহের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে। আইটুআই কেব্লও ২০ জানুয়ারির মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। টিআইসির বিষয়ে কোনো অগ্রগতি জানা যায়নি। অন্তত দুটি কেব্ল ঠিক হলে বাংলাদেশে ইন্টারনেটের গতি আগের মতো স্বাভাবিক হতে পারে। তবে পুরোপুরি ঠিক হতে এক মাস সময় লাগতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত নন। খোঁজখবর নেবেন।