ছয় মাস আগে চালু হলেও সাড়া কম

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পাঁচটি জায়গায় চালু হয়েছে বিনা মূল্যে ওয়াই–ফাই সেবা। সেসব জায়গায় টানানো রয়েছে এমন বোর্ড l ছবি: প্রথম আলো
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পাঁচটি জায়গায় চালু হয়েছে বিনা মূল্যে ওয়াই–ফাই সেবা। সেসব জায়গায় টানানো রয়েছে এমন বোর্ড l ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার পাঁচটি জায়গায় চালু হয়েছে বিনা মূল্যে ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক। আরও ১০টি জায়গায় ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক চালুর কাজ চলছে। তবে যথেষ্ট প্রচার না থাকায় এই বিনা মূল্যের ইন্টারনেট সেবায় জনগণের সাড়া কম। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, আরও কয়েকটি জায়গায় এই সুবিধা চালু হলে প্রচার বাড়ানো হবে।
বিনা মূল্যের ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক চালু হওয়া জায়গাগুলো হচ্ছে মহাখালী বাস টার্মিনাল, গাবতলী বাস টার্মিনাল, গুলশান ২ নম্বর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মার্কেট, গুলশান ১ নম্বর ডিএনসিসি মার্কেট ও বনানীর বীর উত্তম আমিনুল হক সড়ক। এর মধ্যে গুলশান ১ নম্বর ডিএনসিসি মার্কেটে গত সোমবার দিবাগত রাতে আগুন লাগায় আপাতত ওয়াই-ফাই সেবা বন্ধ রয়েছে।
২০১৫ সালের এপ্রিলে অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে নিজের নির্বাচনী ইশতেহারে মেয়র আনিসুল হক ডিজিটাল ঢাকা গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। জনবহুল স্থানগুলোকে বিনা মূল্যে ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের আওতায় আনা ছিল তাঁর অন্যতম প্রতিশ্রুতি।
ডিএনসিসি সূত্রে জানা যায়, ডিএনসিসি এলাকায় বিনা মূল্যে ওয়াই-ফাই সেবা দিচ্ছে ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ‘আমরা নেটওয়ার্কস লিমিটেড’। এ বিষয়ে ২০১৬ সালের ২২ মার্চ আমরা ও ডিএনসিসির মধ্যে ওয়াই-ফাই বিষয়ে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী উত্তর সিটি করপোরেশনের বেশ কিছু স্থানে হটস্পটের (বিনা মূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের উপযোগী) মাধ্যমে তারহীন ইন্টারনেট সেবা প্রদান করবে। এ জন্য আমরা নেটওয়ার্কসকে ডিএনসিসির কোনো টাকা দিতে হচ্ছে না।
চুক্তির পরপরই ডিএনসিসির দেওয়া তালিকা অনুযায়ী পাঁচটি জায়গায় বিনা মূল্যে ওয়াই-ফাই সেবা চালু করা হয়। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, বিনা মূল্যের ওয়াই-ফাই ‘ডিএনসিসি ফ্রি ওয়াই-ফাই’ নামে পরিচালিত হচ্ছে। আমরা নেটওয়ার্কস ওয়াই-ফাই সেবা ব্যবহারকারীদের কাছে তৃতীয় কোনো পক্ষের বিজ্ঞাপন প্রচার করতে পারবে না।

এ বিষয়ে ডিএনসিসির বিদ্যুৎ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী লেফটেন্যান্ট কর্নেল আজাদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ডিএনসিসির ওয়াই-ফাই জোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে কোনো পাসওয়ার্ড প্রয়োজন নেই। যেসব জায়গায় ওয়াই-ফাই চালু করা হয়েছে, স্মার্টফোনের ওয়াই-ফাই অপশন চালু করলেই স্বয়ংক্রিয় সংযোগ চালু হয়ে যায়।

গত রোববার গুলশান ২ নম্বর ডিএনসিসি মার্কেট ও গতকাল শনিবার গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কিছুদূর পরপর ইংরেজিতে ‘ডিএনসিসি ফ্রি ওয়াই-ফাই জোন’ লেখা লাল রঙের বোর্ড টাঙানো। বোর্ডে ডিএনসিসির এবং আমরা নেটওয়ার্কসের লোগো লাগানো আছে। এসব বোর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে স্মার্টফোনের ওয়াই-ফাই অপশন চালু করলেই ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাচ্ছে। ইন্টারনেটের গতিও বেশ ভালো।

তবে দুই জায়গায় বেশ কিছুক্ষণ থেকেও কোনো বিনা মূল্যের ওয়াই-ফাই ব্যবহারকারী পাওয়া যায়নি। গাবতলী বাস টার্মিনালে বসে নিজের মুঠোফোন ব্যবহার করছিলেন আবিদ রহমান। তাঁর খানিক দূরেই বিনা মূল্যের ওয়াই-ফাই জোন। আবিদ রহমান বলেন, ‘আপনি বলায় খেয়াল করলাম, এখানে ফ্রি ওয়াই-ফাই। এত ছোট বোর্ড চোখেই পড়েনি। গাবতলীতে ফ্রি ওয়াই-ফাই আছে, এটাও জানতাম না।’

এ বিষয়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল আজাদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, নতুন ১০টি জায়গায় চালুর পরে আরও কতগুলো জায়গায় চালু করা হবে। বিনা মূল্যে ওয়াই-ফাই ব্যবহার করতে জনগণকে উৎসাহী করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে পুরো উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় বিনা মূল্যে ওয়াই-ফাই সেবা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।