প্রকাশনী সংস্থার টাকায় শিক্ষকদের ভূরিভোজ

শিক্ষার্থীদের নোটবই কিনতে উদ্বুদ্ধ করতে মেহেরপুরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা সমাবেশ ও ভূরিভোজ করেছেন।
গত শনিবার গ্যালাক্সি নামের নোটবই প্রকাশনী সংস্থার আর্থিক সহযোগিতায় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে জেলার প্রায় ৩৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষক অংশ নেন।
বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক ও জেলা শাখার সভাপতি নাজমুল হাসান জানান, নোটবই বিক্রি ও কোচিং ব্যবসা বন্ধে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও গ্যালাক্সির সৌজন্যে কিছু শিক্ষকের ভূরিভোজ আয়োজন ও সমাবেশ নিন্দনীয় ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
নাজমুল হাসান এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন এবং নোটবই বিক্রি ও কোচিং ব্যবসা বন্ধে কর্তৃপক্ষকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান।
মেহেরপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম তৌফিকুজ্জামান বলেন, তদন্ত করে এ ধরনের আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মুজিবনগর উপজেলার দারিয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফতাব আলী জানান, তিনি শিক্ষক সমিতির একাংশের নেতা ও আমঝুপি উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোহামঞ্চদ আলমগীরের আমন্ত্রণে শহরের হাদুবাবুর বাগানে এই ভূরিভোজে অংশ নেন।
সেখানে শহরের এস এম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শরিফুল ইসলাম জানান, এই ভূরিভোজ গ্যালাক্সির সৌজন্যে হচ্ছে। তাই এ জন্য কোনো শিক্ষককে চাঁদা দিতে হবে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক জানান, সেখানে উপস্থিত অধিকাংশ শিক্ষকই কোচিং ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। দেড় শ শিক্ষকের জন্য ছিল পর্যাপ্ত খাসির মাংস, মুরগির রোস্ট, ডিম, দই, মিষ্টি, কোমল পানীয়সহ নানা খাবার। সেখানে উপস্থিত গ্যালাক্সির প্রতিনিধিরা নোটবই নিতে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে শিক্ষকদের অনুরোধ করেন।
এ জন্য শিক্ষকদের আরও সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে গ্যালাক্সির বিক্রয় প্রতিনিধি নাসির উদ্দিন বলেন, অন্যান্য প্রকাশনী সংস্থা শিক্ষকদের নানা উপঢৌকন দিয়ে থাকে। ব্যবসা-বাণিজ্যে টিকে থাকার লক্ষ্যে এ বছর তাঁর সংস্থা শিক্ষকদের পিকনিকের জন্য কিছু সহায়তা দিয়েছে।
শিক্ষক শরিফুল ইসলামের আমন্ত্রণে তাঁরা সেখানে যোগ দেন বলেও তিনি জানান।
এস এম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শরিফুল ইসলাম বলেন, পিকনিকটি কারা করেছে, তা তিনি জানেন না।
তবে সেখানে গ্যালাক্সির নোটবই নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নোটবই ছড়িয়ে দিতে শিক্ষকদের আহ্বান জানানো হয়নি।