সাদুল্যাপুরে হরতাল অবরোধ, থানা ঘেরাও

আওয়ামী লীগ ও যুবদলের নিখোঁজ চার নেতাকে উদ্ধারের দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার নলডাঙ্গায় অর্ধদিবস হরতাল পালিত হয়েছে। নলডাঙ্গা নাগরিক ঐক্য পরিষদের ডাকা হরতাল চলাকালে দোকানপাট বন্ধ ছিল। এ ছাড়া দলীয় নেতা-কর্মী ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনেরা নলডাঙ্গা এলাকায় সড়ক ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন ও সাদুল্যাপুর থানা ঘেরাও করেন। একই দাবিতে সাদুল্যাপুর উপজেলা শহরে মানববন্ধন হয়েছে।

গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় নলডাঙ্গা রেলস্টেশনে সান্তাহার-লালমনিরহাট রেলপথ অবরোধ করা হয়। ফলে ঢাকা থেকে লালমনিরহাটগামী আন্তনগর লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনটি নলডাঙ্গায় পৌঁছে প্রায় আধা ঘণ্টা আটকে থাকে। এ ছাড়া সাদুল্যাপুর-নলডাঙ্গা-রংপুর সড়কের নলডাঙ্গা ডাকবাংলো এলাকায় সড়কে সকাল থেকে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে রাখেন নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনেরা। বিকেল চারটা পর্যন্ত অবরোধ চলে।

এদিকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনেরা বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত সাদুল্যাপুর উপজেলা শহরের গণগ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধন করেন। মানববন্ধন শেষে বিক্ষুব্ধ লোকজন সাদুল্যাপুর থানা ঘেরাও করে চার নেতাকে উদ্ধারের দাবিতে স্লোগান দেন। পরে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বোরহান উদ্দিন নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারের আশ্বাস দিলে আধা ঘণ্টা পর ঘেরাওকারীরা সরে যান।

মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন সাদুল্যাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শামছুজ্জোহা প্রামাণিক,সাধারণ সম্পাদক শাহারিয়ার খান,উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ফজলুল হক, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোন্তেজার রহমান ও সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, নিখোঁজ মনোয়ারুল হাসানের বাবা গোলাম মোস্তফা, স্ত্রী লাভলী বেগম, নিখোঁজ সাদেকুলের মা সাইদা বেগম, সাদুল্যাপুর নাগরিক কমিটির সভাপতি আবুল বাশার প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, নিখোঁজ হওয়ার আট দিন পেরিয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত তাঁদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাঁদের উদ্ধারে পুলিশ কোনো ভূমিকা রাখছে না। এমনকি সাদুল্যাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেও কোনো কাজ হচ্ছে না। তাঁরা বলেন, সরকারদলীয় নেতা-কর্মীদেরই যদি এ অবস্থা হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়। বক্তারা বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ প্রশাসন তাঁদের সন্ধান দিতে ব্যর্থ হলে বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হবে।

১০ ও ১১ জানুয়ারি সাদুল্যাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের তিনজন ও যুবদলের এক নেতাকে সাদাপোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। এর মধ্যে ১০ জানুয়ারি রাতে সাদুল্যাপুর উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি মনোয়ারুল হাসান ও উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাদেকুল ইসলাম এবং ১১ জানুয়ারি সকালে নলডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মাইদুল ইসলাম ও নলডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবদলের সহসাধারণ সম্পাদক শফিউল ইসলামকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।

সাদুল্যাপুর থানার ওসি ফরহাদ ইমরুল কায়েস গতকাল বলেন, পুলিশের কেউ তাঁদের আটক কিংবা তুলে নিয়ে যায়নি। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।