নাটোরে দুই আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে লাশ দাফনে বাধা দেওয়ার অভিযোগ

অনুমতি না নেওয়ায় নাটোরে নলডাঙ্গা উপজেলার বাশিলা কেন্দ্রীয় গোরস্থানে এক বৃদ্ধার লাশ দাফন করতে দেননি বলে অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের স্থানীয় দুই নেতার বিরুদ্ধে। গত বুধবার দুপুরে বাশিলা কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত গভীর রাতে অন্য একটি গোরস্থানে লাশ দাফনে বাধ্য হন মৃত ব্যক্তির স্বজনেরা। এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বাশিলা দক্ষিণপাড়ার মৃত সুলতান মণ্ডলের স্ত্রী আঞ্জুয়ারা বেগম (৭৬) দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর বুধবার সকালে মারা যান। শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তাঁকে বাশিলা কেন্দ্রীয় গোরস্থানে স্বামীর কবরের পাশে দাফনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

আঞ্জুয়ারার ছেলে রেজাউল করিম জানান, সামাজিক রীতি অনুযায়ী তাঁর মাকে দাফনের জন্য ওই গোরস্থানের সভাপতি আবদুল আজিজ ও সহসভাপতি জয়নাল খাঁর কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়। শর্ত অনুযায়ী গোরস্থানের জায়গার জন্য এক হাজার টাকা জমা দিয়ে কবর খননও করা হয়। রাত সাড়ে সাতটার দিকে তাঁরা বাড়ি থেকে লাশ নিয়ে গোরস্থানের দিকে রওনা হন। তাঁরা ফৌজদারপাড়া এলাকায় পৌঁছালে মাধনগর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি তাহের উদ্দিন ও ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাবেক ইউপি সদস্য দিলশাত শেখ তাঁদের বাধা দেন। দাফনের জন্য তাঁদের কাছ থেকে অনুমতি না নেওয়ার অজুহাতে তাঁরা লাশ দাফন করতে দেবেন না বলে জানিয়ে দেন। এ সময় মুসল্লিরা তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। একপর্যায়ে বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। অবশেষে তাঁরা বাধ্য হয়ে রাত ১১টার দিকে বিলজোয়ানী বাশিলা উত্তরপাড়া গোরস্থানে লাশ দাফন করেন। আঞ্জুয়ারার শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে না পেরে স্বজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। উপস্থিত সবাই ঘটনার অমানবিকতায় হতবাক হয়ে পড়েন।

তবে আওয়ামী লীগ নেতা তাহের উদ্দিন বলেন, আঞ্জুয়ারার বাড়ি অন্য পাড়ায়। তাই তাঁরা লাশ দাফনে আপত্তি তুলেছিলেন। তবে লাশ দাফনে বাধা দেননি।

আওয়ামী লীগের অভিযুক্ত অপর নেতা দিলশাত শেখ বলেন, ‘আমরা গোরস্থান কমিটির কেউ না হলেও গোরস্থান উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত আছি। অথচ লাশ দাফনের জন্য আমাদের অনুমতি নেওয়া হয়নি। তাই আমরা আপত্তি করেছি। তবে লাশ দাফন করতে বাধা দিইনি। বরং নিজেদের অবস্থান পাল্টে লাশ আমাদের গোরস্থানে দাফন করতেই বলেছিলাম। কিন্তু আঞ্জুয়ারার স্বজনেরা তা শোনেননি।’

মাধনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাধনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন দেওয়ান বলেন, ‘একজন মুসলমান হিসেবে লাশ দাফনে বাধা দেওয়াটা অনুচিত হয়েছে। আমি ঢাকায় থাকায় ঘটনাটি মুঠোফোনে শুনেছি। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলে আমি এমনটি হতে দিতাম না।’