তেলের দাম আপাতত কমানো হচ্ছে না

মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে কথা বলেন বিদ্যুৎ​ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ  l ছবি: প্রথম আলো
মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে কথা বলেন বিদ্যুৎ​ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ l ছবি: প্রথম আলো

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, জ্বালানি তেলের দাম আপাতত কমানো হচ্ছে না। কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও আবার তা স্থগিত করা হয়েছে। কারণ তেলের বাজারে অস্থিতিশীলতা লক্ষ করা যাচ্ছে। দাম কিছুটা বাড়ছে। আরও বাড়ার সম্ভাবনা আছে। কাজেই বাজার পরিস্থিতি আরও কিছুদিন পর্যবেক্ষণ না করে দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন। গতকাল শনিবার সংগঠনের কার্যালয়ে সাগর-রুনি মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ খাত নিয়ে বিস্তারিত বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নেরও জবাব দেন তিনি।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আবাসিক গ্রাহকেরা আবেদন করার এক দিন পরই নতুন বিদ্যুৎ-সংযোগ পাবেন। এক মাস পর থেকে এই ব্যবস্থা চালু হবে। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো ও টেকসই করার জন্য সরকার এই খাতে জ্বালানি বহুমুখীকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে অনুযায়ী শুধু গ্যাস ও তেলের ওপর নির্ভর না করে সব ধরনের জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে। আবার বিদ্যুতের দামও সহনীয় পর্যায়ে রাখতে হবে। সে ক্ষেত্রে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বিশেষ ভূমিকা রাখবে। সে কারণেই দেশের নানা স্থানে কয়েকটি বড় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ শুরু করা হয়েছে।
নসরুল হামিদ বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সুন্দরবনের কোনো ক্ষতির কারণ হবে না এটা নিশ্চিত হয়েই সরকার সেখানে কেন্দ্রটি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী মাস (ফেব্রুয়ারি) নাগাদ এই কেন্দ্র স্থাপনের ঋণচুক্তি সই হবে। তারপরই শুরু হবে নির্মাণকাজ। মাতারবাড়ী, চট্টগ্রাম ও পায়রা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজও এগিয়ে চলেছে। বিদ্যুতের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকার যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছে। তবে সঞ্চালন ও বিতরণব্যবস্থায় কিছু দুর্বলতা রয়ে গেছে। বছর দুয়েকের মধ্যে তা ঠিক হয়ে যাবে। তখন সবাই নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাবেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ৩৫০ কোটি ঘনফুটের সমপরিমাণ তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এই গ্যাস আমদানি ও ব্যবহারের জন্য সরকার একটি নীতিমালা প্রণয়নের কাজ প্রায় শেষ করে এনেছে। এই এলএনজিসহ দেশে গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বিপরীতে সরকার ‘কার্বন ট্রেডিং’-এর উদ্যোগ নিচ্ছে। অর্থাৎ গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন করায় যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ কম করা হবে সে জন্য বাংলাদেশ নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পাবে।
সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান শুরু করার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে যে মাল্টিক্লায়েন্ট জরিপ পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে খুব শিগগির সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হতে পারে। এ বিষয়টিতে সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। তবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব হচ্ছে মূলত প্রয়োজনীয় সংখ্যক দক্ষ জনবল না থাকায়।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা ও সাধারণ সম্পাদক মোরছালিন নোমানি অনুষ্ঠানে প্রারম্ভিক বক্তব্য দেন ও সবাইকে শুভেচ্ছা জানান।