হাতিটি মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে

কুড়িগ্রামের রাজীবপুর সীমান্তের কাছে মরে পড়ে থাকা হাতিটিকে আজ মঙ্গলবার বেলা তিনটায় মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। এর আগে ভারতীয় পশু চিকিৎসকেরা হাতিটি প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। 

ভারতীয় চিকিৎসকেরা ময়নাতদন্তের জন্য হাতিটির ফুসফুস ও কলিজা তুরায় নিয়ে যান। চিকিৎসকেরা জানান, বিষ খাইয়ে অথবা বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা গেছে। ময়নাতদন্তের পরে সঠিক কারণ জানা যাবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারকে লিখিতভাবে মৃত্যুর কারণ জানানোর কথা জানান তাঁরা।
এ সময় ভারতীয় প্রতিনিধিদলে উপস্থিত ছিলেন মেঘালয় রাজ্যের তুরা ফরেস্ট রেঞ্জের রেঞ্জার আর জি মোমিন, সার্জন এস এম মমিন, বিএসএফ ২৬ ব্যাটালিয়নের কালাইয়ের চর সীমান্ত ফাঁড়ির কোম্পানি কমান্ডার রিসাল সিং।
বাংলাদেশের পক্ষে ৩৩ বিজিপি বালিয়ামারী সীমান্ত ফাঁড়ির কোম্পানি কমান্ডার মোরশেদুল হক ও হাবিলদার গোলাপ হোসেন, রৌমারী ও রাজীবপুর অঞ্চলের বন কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন।
মাটিচাপা দেওয়ার আগে প্রতিনিধিদলটি জানায়, হাতিটি লম্বায় ৯ ফিট ও উচ্চতায় ৭ ফিট ৮ ইঞ্চি ছিল। গতকাল সোমবার ভোরে বাংলাদেশের মিয়াপাড়া থেকে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলার ১০৭২-এর সাব-পিলার ২৯টি-এর সংলগ্ন দক্ষিণ দিকে বাংলাদেশের সীমান্তের কাছে পড়ে ছিল।
এ সময় সেখানে উপস্থিত বিজিবি, বিএসএফ ও এলাকাবাসী জানায়, গত শনিবার সন্ধ্যায় ৩০-৪০টি ভারতীয় বুনো হাতির দল আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলার ১০৭২-এর পাশ দিয়ে বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার রাজীবপুর উপজেলার মিয়াপাড়া ও বাউলপাড়ায় প্রবেশ করে। গত রোববার ভোরে ভারতের কালাইয়ের চর এলাকায় ফিরে যায়। এ সময় হাতির দলটি দুই গ্রামের ১০০ একর জমির ভুট্টা ও গমখেত নষ্ট করে। ওই দিন সন্ধ্যায় গ্রামবাসী ও বিজিবির টহলরত সদস্যরা হাতির দলটিকে কালাইয়ের চরে দেখতে পান। গতকাল সোমবার সকালে হাতিটিকে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় লোকজন। ভারতীয় অংশেই পড়ে ছিল হাতিটি। ওই স্থানটি নোম্যান্স ল্যান্ড থেকে ১০ হাত দূরে। এলাকাটি রাজীবপুর উপজেলা সদর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে সোনাভরি নদীর তীরে কালাইপাড়া। অপর পাশে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের আমপাতি মহকুমার মহেন্দ্রগঞ্জ থানা কালাইয়ের চর ও তুরা পাহাড়।
আজ ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অন্য দিনের তুলনায় মানুষের সমাগম কম। কারণ মরা হাতি দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বহু দূরে গ্রামবাসীরা নাকেমুখে রুমাল দিয়ে হাতি মাটিচাপা দেওয়া দেখছে।
সেখানে উপস্থিত মিয়াপাড়া গ্রামের আলম মিয়া বলেন, ‘কয়েক দিন থেকে হাতির দলটি বাংলাদেশের প্রবেশ করে রাজীবপুর দুই গ্রামে ঢুকে প্রচুর গাছসহ ভুট্টা খায়। এতেই প্রাণীটির ক্ষতি হতে পারে। ভুট্টাগাছে প্রচুর বিষ ছিটান থাকে। এ বিষওয়ালা ভুট্টা খেয়ে মরতে পারে।’
রাজীবপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুর এ শাহী বলেন, গত এক সপ্তাহ থেকে সন্ধ্যার পর ভারতের মেঘালয় রাজ্যের কালাইয়ের চর থেকে সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশের রাজীবপুর সীমান্ত গ্রামগুলোতে প্রবেশ করে। সারা রাত গাছসহ ভুট্টা খায় ও গমখেত নষ্ট করে। সূর্য ওঠার আগে চলে যায়।