চুয়াডাঙ্গায় দুই হুজি সদস্য গ্রেপ্তারের দাবি র‍্যাবের

নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের (হুজি) দুই সদস্যকে গ্রেপ্তারের দাবি করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, (র‌্যাব-৬) ঝিনাইদহ। এই ক্যাম্পের একটি দল আজ শনিবার ভোররাতে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ জিহাদি বই, সার্কিট ও ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানায় র‍্যাব সূত্র।

গ্রেপ্তার সদস্যরা হলেন ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুণ্ড উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে মো. রকিবুল ইসলাম ওরফে রকিব (২৪) এবং রাজবাড়ির পাংশা উপজেলার মহিশডাঙ্গা গ্রামের জমারত আলীর ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুন ওরফে আপন ওরফে যিহাদ (২০)।
র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটলিয়ন (র‌্যাব-৬) ঝিনাইদহের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ক্যাম্প কমান্ডার মেজর মনির আহমেদের নেতৃত্বে বিশেষ দল শনিবার ভোর সাড়ে পাঁচটায় কার্পাসডাঙ্গায় অভিযান চালায়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিচালিত অভিযানকালে হুজির দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় বিপুল পরিমাণ জিহাদি বই, সার্কিট ও ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
র‌্যাব জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে দুজনই নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের (হুজি) সদস্য বলে স্বীকার করেছেন। প্রায় দুই বছর ধরে তাঁরা সংগঠনটির সক্রিয় সদস্য হিসেবে জড়িত। তাঁদের দাবি, আবু খালেক নামের এক জঙ্গিনেতার হাত ধরে দুজনই হুজিতে যোগদান করেন।
রকিবুল বলেন, তিনি মাদ্রাসায় পড়াশোনার পাশাপাশি দুই-তিনটি মসজিদে মাঝেমধ্যে ইমামতি করতেন। ২০১৫ সালে আবু খালেকের উৎসাহে তিনি হুজিতে যোগ দেন। রকিবুলের ভাষ্য, হুজির মূলনীতি হলো এই দেশে নাশকতা কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা। তাঁর (রকিবুলের) দায়িত্ব ছিল বিভিন্ন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নকশা প্রস্তুত করা। আবু খালেকের মাধ্যমে আবদুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে তাঁর পরিচয়।
অন্যদিকে, আবদুল্লাহ আল মামুন র‌্যাবকে বলেন, তিনি বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা করতেন। তিনি ফেসবুক চালাতেন। ফেসবুকের মাধ্যমে অন্যদের সঙ্গে মুজাহিদ নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। এই মুজাহিদই ‘রক্তাক্ত লাঠি’ ফেসবুক আইডি দিত। মুজাহিদ ফেসবুকে কোরআন-হাদিসের আলোকে লেখা দিতেন যেমন: শেষ জামানার বিশেষণ, শেষ জামানার ইমাম মাহাদির আগমন ইত্যাদি। মুজাহিদের লেখা পড়ে আবদুল্লাহ আল মামুন আকৃষ্ট হন এবং তাঁর (মুজাহিদ) মাধ্যমে মোকারমের সঙ্গে পরিচয় হয়। মোকারম তাঁকে (আবদুল্লাহ আল মামুনকে) বলেন, দুনিয়া ধ্বংসের প্রান্তে। যুদ্ধ যদি শুরু হয়, তাঁকে মুসলিমদের প্রতি সমর্থন করার আহ্বান জানান। ২০১৫ সালে সরাসরি মোকারমের সঙ্গে দেখা করেন। মোকারমের মাধ্যমে আবু খালেকের সঙ্গে পরিচয় হয়। সেই থেকে আবু খালেকের তত্ত্বাবধানে জঙ্গি-সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। তাঁর সঙ্গে আরও তিন থেকে চারজন ছিলেন। তাঁরা মূলত ঢাকা ও খুলনায় নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন। মূল কাজ ছিল দলের পক্ষে বিভিন্ন রকম জিনিস সরবরাহ ও বহন করা।
র‌্যাব-৬ ঝিনাইদহ কোম্পানি কমান্ডার মেজর মনির আহমেদ এসবের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
দামুড়হুদা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল খালেক বলেন, বিকেল সাড়ে চারটায় র‌্যাব সদস্যরা ওই দুই জঙ্গিকে থানায় সোপর্দ করেছেন। এ ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে।