মামলা প্রত্যাহার দাবির পোস্টারে বঙ্গবন্ধুর ছবি

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার জারলিয়া জলমহালের দখল নিয়ে সংঘর্ষে তিনজনের মৃত্যু ও পাল্টাপাল্টি মামলার ঘটনায় গতকাল রোববারও উপজেলা যুবলীগ, উপজেলা প্রশিক্ষিত যুব সংসদ (প্রযুস), দিরাই বাজার কর্মচারী সমিতি বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের নেতা ও একজন সাংবাদিকের নাম প্রত্যাহারের দাবিতে উপজেলা সদরে এসব কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
এদিকে, হত্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে পোস্টার সাঁটানো হয়েছে যাতে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও স্থানীয় সাংসদের ছবি রয়েছে।
১৭ জানুয়ারি উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের হাতিয়া গ্রামের পাশের জারলিয়া জলমহালে সংঘর্ষ হয়। জলমহালের দখল নিয়ে দিরাই পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশারফ মিয়া এবং হাতিয়া গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য একরার হোসেনের মধ্যে বিরোধ ছিল। সংঘর্ষে নিহত তিনজনই একরার হোসেনের সমর্থক। ঘটনার পর দিরাই থানায় দুটি পাল্টাপাল্টি মামলা হয়।
হত্যার অভিযোগে একরার হোসেনের দায়ের করা মামলায় মোশারফ মিয়া, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি উজ্জ্বল মিয়া, দৈনিক যুগান্তর-এর উপজেলা প্রতিনিধি জিয়াউর রহমান লিটনসহ ৩৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। জলমহাল লুটপাটের অভিযোগে মোশারফ মিয়ার পক্ষের ধনঞ্জয় দাশের করা মামলায় আসামি করা হয়েছে একরার হোসেনসহ ২৯ জনকে। ঘটনার ১২ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এখনো কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
দুই দিন আগে হত্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে দিরাই পৌর শহরের বিভিন্ন স্থানে একটি পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। ‘জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান লেখা পোস্টারের ওপরে এক পাশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, অন্যপাশে স্থানীয় সাংসদ (দিরাই-শাল্লা) সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ছবি রয়েছে। পোস্টারের মাঝখানে হাফিজুর রহমান, প্রদীপ রায় ও মোশারফ মিয়ার ছবি দিয়ে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে। পোস্টারের নিচের ডান দিকে লেখা রয়েছে ‘প্রচারে: দিরাই উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ’।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আসাব উদ্দিন সরদার বলেন, জলমহালে একরার বাহিনীর (হত্যা মামলার বাদী একরার হোসেন) সঙ্গে জেলেদের সংঘর্ষ হয়েছে। একরার উদ্দেশ্যমূলকভাবে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের নেতা, জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিককে মামলায় আসামি করেছেন। মিথ্যা মামলা দায়েরের নিন্দা ও প্রত্যাহারের দাবি করছি।
তবে একরার হোসেন দাবি করেন, ঘটনার সঙ্গে যাঁরা জড়িত ছিলেন, তাঁদেরই আসামি করা হয়েছে।
দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল জলিল বলেন, ‘আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তাঁরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন।’