কারণ উদ্ঘাটিত হয়নি, তদন্ত করছে ডিবি

রাজধানীর গোপী-বাগে বাবা-ছেলেসহ ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় জড়িতরা অপরিচিত কেউ ছিলেন না বলে ধারণা করছে তদন্তকারী সংস্থা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। হত্যাকারীরা এর আগেও দু-একবার ওই বাসায় গিয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্যে ডিবি জানতে পেরেছে।
তবে স্বজনেরা বলছেন, হত্যাকারীরা ঘটনার দিনই প্রথম ওই বাসায় ঢুকেছিল।
গত রোববার রাতে এ হত্যা মামলা ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়। ডিবির পাশাপাশি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগও (সিআইডি) ছায়া তদন্ত করছে। গত শনিবার সন্ধ্যায় আর কে মিশন রোডের একটি বাসায় ওই ছয়জনকে হত্যা করা হয়।
পরিবারের দাবি, লুৎফোর নিজেকে ইমাম মাহদীর প্রধান সেনাপতি দাবি করতেন।
গতকাল ডিবির যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, পারিবারিক বা ব্যক্তিগত শত্রুতা, সম্পত্তিগত বিরোধ ও উগ্র গোষ্ঠীর সংক্ষুব্ধতা—এ তিনটি বিষয় সামনে রেখে ওই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চলছে। প্রতিটি কারণ নিয়ে ইতিমধ্যে আলাদাভাবে তদন্ত শুরু করেছে ডিবির তিনটি দল। তবে এখন পর্যন্ত হত্যার কারণ উদ্ঘাটন ও হত্যাকারীদের শনাক্ত করা যায়নি।
‘হত্যায় কতজন অংশ নিয়েছিল?’—প্রশ্ন করলে মনিরুল বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে আটজনের কথা জানা গেছে। তবে মামলার এজাহারে ১০-১২ জনের কথা লেখা আছে।’ আটজন মিলে ছয়জনকে হত্যা আর বাকিদের জিম্মি করার সম্ভাব্যতা বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ঘটনার সময় আশপাশে আরও কেউ ছিল কি না, হত্যার নেপথ্যেই বা কারা ছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মনিরুল বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, হত্যাকারীরা আগেও দু-একবার এ বাসায় এসেছিলেন। কিন্তু তাঁরা নামাজের সময় ফিসফিস করতেন বলে অসন্তুষ্ট ছিলেন লুৎফোর।’
তবে লুৎফোরের ছেলে আবদুল্লাহ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার সময় বাসায় থাকা তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, হত্যাকারীরা আগে কখনো বাসায় আসেনি। তবে আগে কাউকে পাঠিয়ে তারা তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। ঘটনার সময় হত্যাকারীরা তাঁকে (আবদুল্লাহ) খোঁজায় বোঝা যাচ্ছে, আগে থেকে তাদের সব ধরনের তথ্য জানা ছিল।
গতকাল দুপুরে গোপীবাগের ওই বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা যায়, লুৎফোরের বাসাটি তালাবদ্ধ করে রেখেছে পুলিশ। দায়িত্ব পাওয়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার আবদুর রকিব ও পরিদর্শক আবু আল খায়ের মাতুব্বর আশপাশের কয়েকজন বাসিন্দাকে জিজ্ঞাসাবাদ ও ঘটনাস্থল থেকে আরও বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করেন।
নিহত লুৎফোর, সরোয়ারুল ও মজিবুলের লাশ টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার চরভুরুয়ায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। অপরদিকে রাসেলের লাশ কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার বড়দশিয়া গ্রামে, শাহীনের লাশ ভোলার লালমোহন থানার কাদিরাবাদ ও মনজুরের লাশ সিরাজগঞ্জ সদর এলাকায় স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।