'মানবসেতু'তে আর হাঁটবেন না তিনি

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুর হোসেন পাটোয়ারী বলেছেন, শিক্ষার্থীদের তৈরি মানবসেতুতে আর হাঁটবেন না তিনি। ভবিষ্যতে আর অংশ নেবেন না এমন কোনো অনুষ্ঠানে। একই সঙ্গে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভবিষ্যতে এ ধরনের অনুষ্ঠান যাতে না হয়, সে ব্যবস্থা নেবেন তিনি। আজ বুধবার সন্ধ্যায় তিনি প্রথম আলোকে এ কথা জানান।

গত সোমবার (৩০ জানুয়ারি) হাইমচর উপজেলার নীলকমল ওসমানিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান ছিল। রেওয়াজ অনুযায়ী সেখানে নবম ও দশম শ্রেণির কিছু শিক্ষার্থী মিলে একটি ‘মানবসেতু’ তৈরি করে। পরস্পরের হাতে হাত রেখে দাঁড়ানো ছিল ছাত্রদের একটি দল। সেই হাতের ওপর উপুড় হয়ে আছে আরও কয়েক ছাত্র। লাইনটা খানিক লম্বা হয়েছে, দেখতে সেতুর মতো। আর এই মানবসেতুর ওপর দিয়ে হেঁটে যান অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপজেলা চেয়ারম্যান নুর হোসেন পাটোয়ারী।

হেঁটে যাওয়ার সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার মুখে পড়েন নুর হোসেন পাটোয়ারী। এরপরই আজ বুধবার সন্ধ্যায় নুর হোসেন পাটোয়ারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমি এ ধরনের কোনো অনুষ্ঠানে আর অংশ নেব না। তা ছাড়া ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আর কখনো যেন এ ধরনের অনুষ্ঠান করতে না পারে, সে ব্যবস্থা নেব।’

মানব সেতুতে জনপ্রতিনিধির হাঁটার বিষয়ে টিআইবি চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি কাজী শাহাদাত বলেন, ‘এ ধরনের অমানবিক ক্রীড়া প্রদর্শনীর আয়োজন ছিল স্কুল কর্তৃপক্ষের সবচেয়ে বড় ভুল। এর জন্য প্রথম আমি তাদের (শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান) দায়ী করব। জনপ্রতিনিধি হয়ে নুর হোসেনও বিবেকহীন কাজ করেছেন। তার জন্য আমরা তাঁকেও দায়ী করছি।’

এর আগে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ২০০২ সালে এই বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে দেখে আসছি শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর এই মানবসেতু বানিয়ে আসছে। স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক প্রশান্ত কুমার দাস এই সেতুর পরিকল্পনা করে আসছেন এবং প্রতিবছর এটি শিক্ষার্থীদের দিয়ে বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানে প্রদর্শন করেছেন। আগেও যাঁরা প্রধান অতিথি ছিলেন, এই সেতুর ওপর দিয়ে তাঁরা হেঁটে গেছেন। এবারও সেটা হয়েছে।’