মতলবের ১১ গ্রামে কুকুরের কামড়ে তিন দিনে নিহত ১ আহত ২২

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় কয়েক দিন ধরে ১১টি গ্রামের লোকজনের মধ্যে কুকুর-আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত সোম, মঙ্গল ও আজ বুধবার কুকুরের কামড়ে আহত হয়েছে ২২ জন। মারা গেছে এক শিশু। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নবকলস, শীলমন্দি, দারিন্দা রসুলপুর, ঢাকিরগাঁও, চরমুকুন্দি, চরনয়া, ঘোষপাড়া, নিলক্ষ্মী, সর্দারকান্দি, লক্ষ্মীপুর ও বাইশপুর গ্রামে তিন-চার দিন ধরে পাগলা কুকুরের উপদ্রব অনেক বেড়েছে। রাস্তায় লোকজন বের হলেই তাদের কামড়াতে থাকে এসব কুকুর।
চরমুকুন্দি গ্রামের মো. শাহাদাত হোসেন (৩০) ও নবকলস এলাকার হাজেরা বেগম (৬৫) বলেন, কয়েক দিন ধরে তাঁদের এলাকায় পাগলা কুকুরের আনাগোনা বেড়েছে। ঘরের বাইরে গেলে এসব কুকুর লোকজনের ওপর আক্রমণ করে। কুকুর দেখলেই অনেকে দৌড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যায়। তবু প্রতিদিন অনেকে আক্রমণের শিকার হচ্ছে। লোকজনের মধ্যে কুকুরের আতঙ্ক কাজ করছে। তাঁরা অভিযোগ করেন, বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কুকুরে কামড়ে আহত হয়ে সেখানে গত সোমবার ১৯ জন চিকিৎসা নিয়েছে। এ ছাড়া গত মঙ্গলবার নবকলস গ্রামের শামসুল আরেফীন (৪) ও শীলমন্দির মোফাজ্জল হোসেন (৫০) চিকিৎসা নিয়েছে। আজ বুধবার নবকলসের হাজেরা বেগম (৬৫) চিকিৎসা নেয়। উল্লিখিত তিন দিনে কুকুরের কামড় খেয়ে ২২ জন চিকিৎসা নিয়েছে।
দারিদ্রা রসুলপুর গ্রামের মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, গত সোমবার সকালে তাঁর ছোট ভাই মো. শিহাব (৮) বাড়ির বাইরে যায়। আচমকা দু-তিনটি কুকুর তাকে এলোপাতাড়ি কামড়ায়। এতে তার বুক, পিঠ, মাথা ও হাত-পা রক্তাক্ত জখম হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় পরিবারের লোকেরা সেখান থেকে উদ্ধার করে তাকে স্থানীয় এক পল্লি চিকিৎসকের কাছে নেন। কিছুক্ষণ পর সে মারা যায়। শিহাব স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। তার (শিহাব) পিতার নাম নূরুল ইসলাম।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এ কে এম মাহাবুবুর রহমান বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রতিষেধক (ভ্যাকসিন) দেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শহিদুল ইসলাম বলেন, গত সোমবার উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। কুকুর নিধন না করার জন্য উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ জন্য কুকুর নিধন করা যাচ্ছে না। বেওয়ারিশ কুকুর শনাক্ত করে সেগুলোকে প্রতিষেধক দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে পৌরসভার মেয়র ও সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
মতলব পৌরসভার মেয়র আওলাদ হোসেন ও দুজন ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, কুকুর দমন বা প্রতিরোধে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।