পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকে ছাত্রীকে লাঞ্ছিত করল বখাটে

নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার বাগাতিপাড়া মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের পরীক্ষা কক্ষে ঢুকে এক ছাত্রীকে লাঞ্ছিত করেছে বহিরাগত এক বখাটে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে এই ঘটনা ঘটে। ওই ছাত্রীকে লাঞ্ছিত করে কোনো বাধা ছাড়াই আবার নির্বিঘ্নে কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে যেতেও সক্ষম হয়েছে ওই বখাটে।

বাগাতিপাড়া মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের কলেজ শাখায় পরীক্ষা চলছিল। এ সময় বহিরাগত এক তরুণ আচমকা এক পরীক্ষা কক্ষে ঢুকে সেখানে পরীক্ষা দিতে বসা এক ছাত্রীর ওপর চড়াও হয়। ওই ছাত্রীকে সবার সামনে মারধর শুরু করে। এ সময় ওই ছাত্রীর চিৎকারে হতভম্ভ হয়ে পড়ে অন্য পরীক্ষার্থীরাও। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা নিজেদের সামলে নিয়ে হইচই শুরু করলে বখাটে কেন্দ্র ছেড়ে যায়। এ সময় ওই কক্ষে দায়িত্বরত শিক্ষক ও কেন্দ্রে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের নির্বাক দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

পরে কেন্দ্রসচিব হুমায়ন কবিরসহ অন্যান্য শিক্ষক ও পুলিশ সদস্যরা ওই কক্ষে যান। তাঁরা হামলার শিকার ওই ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। তখন মেয়েটি জানায়, ওই বখাটে তার পরিচিত। প্রতিদিনই ছেলেটি তাকে কেন্দ্রে আসার পথে উত্ত্যক্ত করে। এর প্রতিবাদ করায় ক্ষুব্ধ ওই বখাটে তাকে অপদস্থ করতেই পরীক্ষা কক্ষে ঢুকে মারধর করে। পরে কেন্দ্রসচিব ঘটনাটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অবহিত করেন।

কেন হামলাকারী ওই তরুণকে আটক করা হয়নি, জানতে চাইলে পরীক্ষা কেন্দ্রের শাখা তত্ত্বাবধায়ক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঘটনাটি পরীক্ষা শুরুর সময়। এ সময় বহিরাগতদের বের করে দেওয়া হচ্ছিল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই হামলাকারী মুহূর্তের মধ্যে ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল পরীক্ষা কক্ষে কে কক্ষ পরিদর্শক ছিলেন তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তাঁদের নাম-পরিচয় আমার মনে নেই।’

এদিকে পরীক্ষা চলাকালে একজন বহিরাগত তরুণের সেখানে প্রবেশ ও ছাত্রীকে মারধরের ঘটনায় ক্ষোভ ও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন উপস্থিত অভিভাবকেরা। তাঁরা তাৎক্ষণিকভাবে কেন্দ্রসচিবের কাছে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, পুলিশের নিরাপত্তাবেষ্টনী অতিক্রম করে শিক্ষকদের সামনে দিয়ে কীভাবে একজন বখাটে পরীক্ষা দিতে বসা ছাত্রীকে মারধর করতে পারে, তা বোধগম্য নয়। এ ব্যাপারে পুলিশ ও কেন্দ্রসচিবসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের গাফিলতি রয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।

কেন্দ্রসচিব খালিদ হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রশাসনকেও জানানো হয়েছে। ঘটনার জন্য কারা দায়ী তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনার জন্য শুধু পুলিশকে দায়ী করলে হবে না। যাঁরা কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করছিলেন তাঁরা কীভাবে ঘটনা চলতে দিলেন তাও খতিয়ে দেখতে হবে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত ওই তরুণকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।