অবসর-ভাতার দাবিতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবরুদ্ধ


চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার কয়েক বছর পার হলেও পেনশনের টাকা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন পঞ্চগড় চিনিকলের শতাধিক শ্রমিক কর্মচারী। ওই পেনশনের টাকার দাবিতে গতকাল রোববার পঞ্চগড় চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অবরুদ্ধ করে রাখেন ক্ষুব্ধ অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কর্মচারীরা।
অবসরপ্রাপ্ত কয়েকজন শ্রমিক কর্মচারী বলেন, অবসরে যাওয়ার ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে পেনশনের টাকা দেওয়ার নিয়ম থাকলেও কয়েক বছর পার হলেও তাঁদের পেনশনের টাকা দিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। তাই অবিলম্বে পেনশনের টাকা পরিশোধের জন্য তাঁরা গতকাল দুপুরে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমদাদুল হককে তাঁর কক্ষে আটকে রাখেন। পরে পঞ্চগড় চিনিকল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের নেতাদের মধ্যস্থতায় অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কর্মচারীরা ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কক্ষ ত্যাগ করেন।
অবসরপ্রাপ্ত গাড়িচালক মোশারফ হোসেন বলেন, ২০১৪ সালে অবসরে গেছেন তিনি। অবসরের পর জমি-জায়গা বন্ধক রেখে ১১ সদস্যের সংসার চালাচ্ছেন। পেনশনের ৫ লাখ টাকা পেয়ে বন্ধকি জমিগুলো ফেরত নেবেন বলে আশায় আছেন। এখন পরিবারের কাছে হেয় হয়ে বেঁচে আছেন। কেউ ভালোবাসে না। ল্যাবকেমিস্ট উসমান গণির অবসরে যাওয়ার দুই বছর পেরিয়ে গেলেও পেনশন পাননি। মেয়ের বিয়ের আলোচনা করে রেখেছেন। কিন্তু বিয়ে দিতে পারছেন না। আশায় আছেন পেনশনের।¯ অবসরপ্রাপ্ত টারবাইন অপারেটর একরামুল হোসেন বলেন, ‘মরে যাব। পেনশনের টাকা বোধ হয় চোখে দেখা হবে না।’
পঞ্চগড় চিনিকল সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৪৩ জন শ্রমিক কর্মচারী অবসরে গেছেন। তাঁদের পেনশনের টাকা এখনো পরিশোধ করা হয়নি। তাঁরা পেনশন বাবদ প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকা পাবেন। এদিকে একই সময়ে অবসর নিলেও কর্মকর্তারা ঠিকই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পেনশন পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেন অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কর্মচারীরা। তাঁরা বলেন, তাঁরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
পঞ্চগড় চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমদাদুল হক বলেন, ‘অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কর্মচারীদের পেনশনের জন্য সদর দপ্তরে প্রয়োজনীয় চাহিদা দেওয়া হয়েছে। কর্মকর্তাদের পেনশন পাওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘কর্মকর্তাদের পেনশনের বিষয়টা সরাসরি সদর দপ্তর থেকে পরিচালনা করা হয়।’