অষ্টম শ্রেণির নিবন্ধন অনিশ্চিত ৪০ জনের

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার সনদ না পাওয়ায় ঢাকার ধামরাইয়ের কয়েকটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪০ শিক্ষার্থীর অষ্টম শ্রেণির নিবন্ধন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এই শিক্ষার্থীরা ২০১৪ সালের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পশ্চিম দেপশাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১৪ সালে ২১ জন ছাত্র ও ১৯ জন ছাত্রী প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেয়। উত্তীর্ণ হওয়ার পর তারা স্থানীয় ভালুম আতাউর রহমান খান উচ্চবিদ্যালয়, কালামপুর আমাতন নেসা বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও শৈলান উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। ভর্তির সময় তারা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে দেওয়া প্রশংসাপত্র জমা দিয়েছিল। এ বছর অষ্টম শ্রেণিতে ওঠার পর থেকে সংশ্লিষ্ট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে নিবন্ধনের জন্য তাদের প্রাথমিক সমাপনীর সনদ জমা দিতে বলা হচ্ছে। কিন্তু প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সরবরাহ না করায় তারা তা জমা দিতে পারছে না।

আমাতন নেসা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সাজেদা আক্তার জানায়, সে ২০১৪ সালে দেপশাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। এ বছর অষ্টম শ্রেণিতে নিবন্ধনের জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে প্রাথমিক সমাপনীর সনদ জমা দিতে বলেছে। কিন্তু প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সনদ সরবরাহ না করায় সে তা জমা দিতে পারছে না।

ভালুম আতাউর রহমান খান উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র শাকিল হোসেন বলে, কয়েক মাস আগে পশ্চিম দেপশাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১৫ সালের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের সনদ দেওয়া হয়। বিষয়টি জানার পর তারা (২০১৪ সালের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা) সনদের জন্য ওই বিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক আসলাম হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করে। আসলাম হোসেন সনদ নেই বলে তাদের বিদায় করে দেন।

ভালুম আতাউর রহমান খান উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার সনদ ছাড়া অষ্টম শ্রেণিতে নিবন্ধন সম্ভব নয়। এ কারণে তাদের সনদ জমা দেওয়ার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে।  

জানতে চাইলে দেপশাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা সহকারী শিক্ষক লোকমান হোসেন বলেন, আসলাম হোসেন গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ওই বিদ্যালয় থেকে বদলি হওয়ার পর তাঁকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। দায়িত্ব পাওয়ার পর বিষয়টি জেনে তিনি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে অবগত করেন। তবে সনদ সরবরাহ করা হয়নি। তিনি বলেন, তাঁর বিদ্যালয়ের ২০১৪ সালের শিক্ষার্থীরা সনদ না পেলেও ২০১৫ সালের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা সনদ পেয়েছে। এ কারণেই বেশি জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা প্রায় প্রতিদিনই বিদ্যালয়ে এসে সনদের জন্য তাঁর ওপর চাপ প্রয়োগ করছেন। 

যোগাযোগ করা হলে আসলাম হোসেন বলেন, মহাপরিচালকের দপ্তর থেকে সরবরাহ করা সনদ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের কম্পিউটারে নষ্ট হয়ে যায়। নতুন করে সনদ সরবরাহ করা হয়নি। এ কারণে ২০১৪ সালের শিক্ষার্থীদের সনদ দেওয়া সম্ভব হয়নি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী রাশেদ মামুন বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর সনদের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে। খুব শিগগিরই সনদ পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।’