বিজিবির মামলায় বাড়ি ও স্কুলছাড়া ৩ শিশু

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার কোমলমতি তিন শিক্ষার্থী মামলার কারণে বাড়ি ও বিদ্যালয় ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। অবৈধভাবে ভারতের জলসীমায় প্রবেশের অভিযোগে গত বুধবার মামলাটি করেছে বিজিবি।

ডিমলা উপজেলার কালীগঞ্জ বিজিবি ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার আলী আজম বুধবার রাতে মামলাটি করেন। মামলার আসামি তিন শিক্ষার্থী হলো উপজেলার কালীগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র আল আমিন (১২) ও অষ্টম শ্রেণির ছাত্র হাফিজুল ইসলাম (১৩) এবং কালীগঞ্জ গেনদির চৌপথী হাফিজিয়া মাদ্রাসার ছাত্র আমির হোসেন (৯)। মামলায় খোকা মিয়া (৫০) নামের একজনকেও আসামি করা হয়েছে। সবার বাড়ি স্থানীয় পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ঝাড়শিংহেশ্বর গ্রামে।

জানতে চাইলে মামলার বাদী আলী আজম প্রথম আলোকে বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই তিনি মামলাটি করেছেন।

বিজিবি ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, খোকা মিয়ার নৌকা নিয়ে ওই শিক্ষার্থীরা গত মঙ্গলবার বিকেলে তিস্তা নদীতে বেড়াতে যায়। একপর্যায়ে তারা স্থানীয় ঝাড়সিংহেশ্বর গ্রামের কাছের সীমানা পিলার অতিক্রম করে ভারতের জলসীমার ১০০ গজ ভেতরে ঢুকে পড়ে। এ সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা (বিএসএফ) ধাওয়া করলে তারা নৌকা ফেলে পালিয়ে বাংলাদেশের ভেতরে ফিরে আসে। বিএসএফ নৌকাটি জব্দ করে নিয়ে গেছে।

নৌকার মালিক খোকা মিয়া বলেন, ‘আমার নৌকাটি ঘাটে বাঁধা ছিল। গ্রামের ওই তিন শিশু কখন সেটি নিয়ে নদীতে বেড়াতে যায়, সেটি আমার জানা ছিল না। এখন তাদের সঙ্গে আমাকেও মামলায় আসামি করা হয়েছে।’

ঝাড়শিংহেশ্বর গ্রামের সোলায়মান আলী (৪০) বলেন, ‘নৌকায় চলাচল করতে গিয়ে আমরা বড়রাই বাংলাদেশের জলসীমা কোথায়, তা অনেক সময় বুঝতে পারি না। সেখানে শিশুরা ভুল করতেই পারে। তাদের অসৎ কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। ওই শিশুদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় আমরা বিস্মিত হয়েছি।’

পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ খান বলেন, ভুল করে ওই শিশুরা ভারতীয় জলসীমায় ঢুকে পড়ে। এমন একটি ঘটনায় ওই শিশুদের বিরুদ্ধে বিজিবির মামলা করা ঠিক হয়নি বলে তিনি মনে করেন। তিনি আরও বলেন, মামলার পর থেকে ওই শিক্ষার্থীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। গ্রেপ্তারের ভয়ে তারা স্কুলেও যেতে পারছে না।

তবে ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন গতকাল শুক্রবার বিকেলে বলেন, মামলাটি তদন্তাধীন। তাই পুলিশ এখন পর্যন্ত অভিযানে যায়নি।