নিষেধাজ্ঞা অমান্য, ত্রিশালের চারটি ইটভাটায় পুড়ছে কাঠ

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় নিয়ম না মেনে ইটভাটায় পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। ছবিতে নওপাড়া গ্রামের শাপলা ইটভাটায় পোড়ানোর জন্য রাখা কাঠের স্তূপ দেখা যাচ্ছে। অদূরে বাগান ইটভাটায়ও পোড়ানো হয় কাঠ। গত মঙ্গলবার তোলা l প্রথম আলো
ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় নিয়ম না মেনে ইটভাটায় পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। ছবিতে নওপাড়া গ্রামের শাপলা ইটভাটায় পোড়ানোর জন্য রাখা কাঠের স্তূপ দেখা যাচ্ছে। অদূরে বাগান ইটভাটায়ও পোড়ানো হয় কাঠ। গত মঙ্গলবার তোলা l প্রথম আলো

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার চারটি ইটভাটায় অবাধে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। পরিবেশ অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয় থেকে কাঠ না পোড়াতে লিখিতভাবে নিষেধ করা হলেও তা মানা হচ্ছে না।

ওই চারটি ইটভাটা ত্রিশালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে আনুমানিক এক কিলোমিটার পূর্ব দিকে নওপাড়া গ্রামে অবস্থিত। ভাটাগুলো হচ্ছে শাপলা, হামিদ, এম এস বি এবং বাগান।

স্থানীয় লোকজন বলেন, প্রতিদিন ট্রাক বোঝাই করে এসব ইটভাটায় কাঠ আনা হয়। চারটি ইটভাটায় গড়ে প্রতিদিন ১০০ মণ কাঠ পোড়ানো হয়। আশপাশের গ্রাম থেকেই কাঠ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কেনা হয় এসব কাঠ। এতে ত্রিশাল ও ফুলবাড়িয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের গাছ কমে যাচ্ছে।

গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, শাপলা ইটভাটার পেছন দিকে নানা আকৃতির গাছের গুঁড়ি ও ডাল স্তূপ করে রাখা। এ সময় ভাটাটির শ্রমিকেরা বলেন, কয়লার পাশাপাশি ভাটায় কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ মণ কাঠ পুড়ছে।

ভাটাটির মালিক আইয়ুব আলী বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানি। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে নিষেধ করা হয়েছে। তবু কয়লার সংকটের কারণে মাঝেমধ্যে কাঠ পোড়াতে হয়।’

একই এলাকায় অবস্থিত হামিদ ইটভাটায় দেখা যায়, গাছের গুঁড়ি ও ডালপালা পোড়াচ্ছেন শ্রমিকেরা। শ্রমিকেরা বলেন, কয়লা বা কাঠ পোড়ানোর বিষয়টি মালিক বা ম্যানেজার ঠিক করে দেন।

ইটভাটাটির ব্যবস্থাপক দিলীপ কুমার পাল বলেন, কয়লার পাশাপাশি এখানেও প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ মণ কাঠ পোড়ানো হয়।

এম এস বি ইটভাটাতেও গতকাল দুপুরে গিয়ে কাঠ পোড়াতে দেখা যায়। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা হলে তাঁরা বলেন, এসব কাঠ কোথা থেকে আনা হয়, তা তাঁদের জানা নেই। এ সময় ভাটায় মালিক বা ব্যবস্থাপককে পাওয়া যায়নি।

পরে রাকিব হাসান নামের একজন মালিকের প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে বলেন, নিষেধ থাকলেও ভাটায় প্রতিদিন কাঠ পোড়ানো হয়। ভাটাটির মালিকের নাম সারোয়ার হোসেন। তাঁর মুঠোফোন নম্বর চাইলে তিনি দিতে অস্বীকৃতি জানান।

একই গ্রামে অবস্থিত বাগান নামের ইটভাটাটিতে গিয়েও কাঠ পোড়াতে দেখা যায়। শ্রমিকেরা এ সময় কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তাঁরা ভাটাটির মালিকের নাম জানেন না বলে জানান।

পরিবেশ অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক নুর আলম বলেন, ‘ত্রিশালে বিভিন্ন ইটভাটায় কাঠ পোড়ানোর অভিযোগ আছে। ইতিমধ্যে আমরা কাঠ পোড়ানোর দায়ে চারটি ইটভাটা বন্ধ করে দিয়েছি। দ্রুত আবারও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কাঠ পোড়ানোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’