চেয়ারম্যান পদে বিএনপির প্রার্থী জহিরুল জয়ী

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন গতকাল সোমবার শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিএনপির প্রার্থী মো. জহিরুল ইসলাম বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতি ছিল খুবই কম।

সন্ধ্যা সাতটার দিকে উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নাজমুল ইসলাম বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মো. জহিরুল ইসলাম মবিন ২৭ হাজার ৩০২টি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) মোহাম্মদ সোহেল পেয়েছেন ২১ হাজার ৩২৮ ভোট। তৃতীয় প্রার্থী আওয়ামী লীগের জহিরুল ইসলাম ১৯ হাজার ২২ ভোট পেয়েছেন।

গতকাল সকাল আটটার দিকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। চলে বিকেল চারটা পর্যন্ত। এ সময় বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোটারদের সারি দেখা যায়নি। তবে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে কয়েকটি কেন্দ্রে ভোটারদের ভিড় দেখা যায়।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তরফদার মো. আক্তার জামীল বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা কঠোরভাবে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করায় কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ৪৯টি কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হয়। তবে উপনির্বাচন হওয়ায় ভোটারের উপস্থিতি কম ছিল।

২০১৫ সালের ২৯ নভেম্বর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আয়ুব আলীর মৃত্যুর কারণে চেয়ারম্যানের পদটি শূন্য হয়। এটি জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সংসদীয় নির্বাচনী এলাকা।

পৌর এলাকার দ্বীপেশ্বর গ্রামের ফেরদৌস মিয়া, নারায়ণডহর এলাকার কামরুল ইসলামসহ ১০ জন ভোটার বলেন, অনেকের কাছে উপনির্বাচন তেমন গুরুত্ব পায়নি। তা ছাড়া আজ (গতকাল) আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় কেন্দ্রে আসার ব্যাপারে ভোটারদের আগ্রহ অনেকটা কমে যায়। আগের নির্বাচনে তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকেও অনেকে ভোট দিতে আসেননি।

দুপুর ১২টার দিকে নারায়ণডহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে ভোটকেন্দ্র একেবারে ফাঁকা পাওয়া যায়। হোসেনপুর মডেল পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে বেলা একটার দিকে গিয়েও একই অবস্থা দেখা যায়। একই চিত্র দেখা যায় হোসেনপুর ২ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধুলজুরি আয়শা আখতার-ইসহাক ফোরকানিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রসহ ১৫টি কেন্দ্রের।

ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর বিকেল সোয়া চারটার দিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও দলটির উপজেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জহিরুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ হয়েছে। কোথাও ঝামেলা হয়নি।

বিএনপির প্রার্থী ও দলটির উপজেলা কমিটির সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বলেন, ভোট গ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। অন্যরা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য পারেনি।

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মোহাম্মদ সোহেল বলেন, সরকারি দলের নেতা-কর্মীরা কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার ও জালভোট মারার চেষ্টা চালান। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপে তা সম্ভব হয়নি।