বিলাসী শৌচাগারে জুয়ার আসর, সঙ্গীসহ জেলে জাহাঙ্গীর

সিলেটে সুরমা নদীর তীর দখল করে মৎস্য আড়তদার সমিতির নামে নির্মাণ করা বিলাসী সেই শৌচাগারের একাংশ ভাঙার পর কাজীরবাজার মৎস্য আড়তদার সমিতি সেটি আর ব্যবহার করছিল না। কিন্তু সেখানে প্রতি রাতেই জুয়ার আসর বসত। অভিযোগ ছিল, শৌচাগার নির্মাণকারী কাজীরবাজার আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে সেখানে চলে জুয়ার আসর।

গত সোমবার মধ্যরাতে জুয়া খেলা অবস্থায় জাহাঙ্গীরসহ ৪২ জন জুয়াড়িকে আটক করে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সিলেট নগরের ব্যস্ত কিনব্রিজ এলাকার সুরমাতীরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এম সাজ্জাদ হাসান ও জিয়াউল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানো হয়। আদালত জাহাঙ্গীরকে ১০০ টাকা অর্থদণ্ড ও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠান। জুয়া খেলার আসর বসাতে জাহাঙ্গীরকে সহযোগিতাকারী বিল্লাল হোসেন নামের আরেকজনকে একই দণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। এ ছাড়া জুয়ার আসর থেকে আটক ৪০ জন জুয়াড়িকে ১০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা করে অর্থদণ্ড দিয়ে ভবিষ্যতে আর জুয়া খেলবে না মর্মে অঙ্গীকার আদায় করে ছেড়ে দেওয়া হয়।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এম সাজ্জাদুল হাসান ও জিয়াউল ইসলাম চৌধুরী বলেন, প্রকাশ্যে জুয়া খেলার দায়ে দুজনকে কারাদণ্ড ও অন্যদের অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া জুয়ার আসর থেকে ১ লাখ ৭৭ হাজার টাকা, ৪৫টি মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে।

কাজীরবাজার মৎস্য আড়তদার সমিতি প্রায় ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে দোতলা শৌচাগার নির্মাণ করে। স্থাপনাটি সুরমা নদীর ওপর গড়ে তোলা হয়েছিল। এ নিয়ে গত বছরের ২১ জুন প্রথম আলোয় ‘সুরমাতীরে বিলাসী শৌচাগার, বর্জ্য মিশছে নদীতে’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। পরে সিলেট সিটি করপোরেশন সরেজমিন অনুসন্ধান চালিয়ে সত্যতা পায়।

সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল আহাম্মদ প্রথম আলোকে জানান, শৌচাগারের ওপরের অংশ ভেঙে ফেলায় সেটি ব্যবহার না করার সুযোগে প্রতি রাতে জাহাঙ্গীর জুয়ার আসর বসাতেন। কিন্তু পুলিশ অভিযান চালালে তাঁকে পাওয়া যেত না। গতকাল রাত প্রায় আড়াইটার দিকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল সেখানে অভিযান চালিয়ে জাহাঙ্গীরসহ ৪২ জনকে আটক করে। এ সময় জুয়া খেলার সামগ্রীও উদ্ধার করা হয়।