ড্রাইভিং লাইসেন্স, রেজিস্ট্রেশন ফিটনেস কিছুই নেই

ফিটনেসবিহীন  গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। এ সময় আটকাতে গেলে ট্রাফিক পুলিশকে অমান্য করে বাস নিয়ে পালিয়ে যান চালক।lপ্রথম আলো
ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। এ সময় আটকাতে গেলে ট্রাফিক পুলিশকে অমান্য করে বাস নিয়ে পালিয়ে যান চালক।lপ্রথম আলো

আসিয়ান পরিবহনের লক্কড়-ঝক্কড় বাসটিকে থামাতে সংকেত দেন পুলিশের দুই সদস্য। চালক বাস না থামিয়ে বরং গতি বাড়িয়ে দেন। এ সময় পুলিশ ও আনসারের আরও পাঁচ সদস্য লাঠি ও অস্ত্র হাতে বাসের সামনে দাঁড়ান। এতে গাড়ি থামাতে বাধ্য হন চালক। তখন তাঁকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ধরে নিয়ে যান পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার বেলা একটায় টিকাটুলীর অভিসার সিনেমা হলের সামনের চিত্র এটি।

মহানগরে ফিটনেসবিহীন যান চলাচল বন্ধে এখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এই আদালত পরিচালনা করেন ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাসমিয়া জায়গির। আসিয়ান পরিবহনের ওই চালকের নাম আনোয়ার হোসেন।

আদালত আনোয়ারের ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির রোড পারমিট, রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস সনদ, ট্যাক্স টোকেন ও ভাড়ার তালিকা দেখতে চান। কিন্তু তিনি এর কোনো কাগজপত্রই দেখাতে পারেননি। এ সময় তাঁকে আট হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। অন্যথায় তাঁর গাড়ি ডাম্পিংয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ঘণ্টা খানেক পর জরিমানা দিয়ে গাড়ি ছাড়িয়ে নেন আনোয়ার।

দেখা যায়, আশিয়ান পরিবহনের একটি আসনের উচ্চতা একেক রকম। দুই পাশের জানালার কাচ ভাঙা। পেছনের কাচ ভেঙে পড়ে গেছে। সামনের কাচটি ফেটে চৌচির। বাসটিতে ওঠানামার সিঁড়িও ভাঙা।

গতকাল মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ থেকে তোলা। এদিকে টিকাটুলীর হাটখোলায় আদালত ​চাল​কদের বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেন  l প্রথম আলো
গতকাল মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ থেকে তোলা। এদিকে টিকাটুলীর হাটখোলায় আদালত ​চাল​কদের বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেন l প্রথম আলো

এই বাসের যাত্রী দক্ষিণ যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা মোতালেব মিয়া বলেন, বাসের আসন ছোট হওয়ায় পা বাঁকা করে বসতে হয়। এ ছাড়া যত্রতত্র বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠানো-নামানো হয়। বাসে দাঁড়িয়ে লোক নেওয়া হয়। এসব বাসে স্বচ্ছন্দে চলাচল করা যায় না। একান্ত বাধ্য হয়েই তারা এসব লক্কড়-ঝক্কড় বাসে যাতায়াত করছে। তবে এভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে সাজা দিলে পরিবহনব্যবস্থার উন্নয়ন হবে।

একই স্থানে বেলা দেড়টার দিকে গ্রিন বাংলা পরিবহন প্রাইভেট লিমিটেডের একটি মিনিবাস আটক করেন পুলিশ ও আনসার সদস্যরা। এই বাসটিরও রোড পারমিট, রেজিস্ট্রেশন, ট্যাক্স টোকেন ও বিমা করা ছিল না। চালকেরও ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। বাসটিতে অতিরিক্ত আরও ১০টি আসন বসানো হয়েছে। এই আসনগুলো অনেক ছোট। ঠিকমতো বসার উপায় নেই। বাসের ভেতরে-বাইরে রং উঠে গেছে। এই বাসটিকেও ছয় হাজার টাকা জরিমানা করেন একই আদালত।