গুলিস্তানে আবার হকাররা তৎপর

টুকরি, চাদর, পলিথিন, বাঁশের মাচা নিয়ে হকাররা আবারও সরব রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায়। দুপুর ১২টার পরই তাঁদের উপস্থিতি বেড়ে যায়। নিয়মকানুনের কোনো পাত্তাই দিচ্ছেন না তাঁরা। তবে মতিঝিল, বায়তুল মোকাররম ও পল্টনের দিকের সড়কের ফুটপাত এখনো হকারদের দখলমুক্ত রয়েছে।

গত সোম ও মঙ্গলবার গুলিস্তান ও এর আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হকারদের ভিড় আবার প্রায় আগের মতোই। তবে এখন তাঁরা স্থায়ী স্থাপনা করেননি। অধিকাংশ হকারই ফুটপাতে বসছেন টুকরি নিয়ে। সিটি করপোরেশনের লোক বা পুলিশ দেখলে যাতে খুব সহজেই কেটে পড়া যায়।

 সোমবার দুপুরে দেখা যায়, মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে যাত্রাবাড়ী থেকে ফুলবাড়িয়া যাওয়ার সড়কটি পুরোটাই হকাররা দখল করে রেখেছেন। কোনো যানবাহনই চলতে পারছে না। যানবাহন ঢুকতে গেলে হকাররা ঘুরে যাওয়ার জন্য বলেন। সবাইকেই বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ ঘুরে যেতে হচ্ছে। হকারদের বেশির ভাগ জুতা বিক্রেতা।

বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের অবস্থাও একই। সড়কের পাশে একজন টেবিলে তাঁর পণ্য সাজাচ্ছেন। আরেকজন মাইকে প্রচার চালাচ্ছেন নিজের পণ্যের। সড়কজুড়েই হকারদের পণ্যের সারি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) প্রায় দেড় মাস আগে হকারদের নতুন সময় বেঁধে দেয়। কর্মদিবসে সন্ধ্যার পর ও শুক্র-শনিবার পুরো দিন বসার জন্য নির্দেশ দেয়। এ নিয়ে হকাররা বেশ কিছুদিন বিক্ষোভও করেন। উচ্ছেদে ফুটপাতের সব স্থাপনা ভাঙাসহ ডিএসসিসি নিয়োগ দেয় আলাদা স্বেচ্ছাসেবক; যাঁরা হকারদের দেখলেই তুলে দিতেন।

গুলিস্তান ট্রেড সেন্টার, পাতাল মার্কেটের সামনে, জিরো পয়েন্ট এলাকা, গোলাপ শাহ মাজারসহ বিভিন্ন সড়কে হকাররা বসছেন। তবে এবার তাঁরা মূল সড়কে জায়গা নিয়েছেন। মঙ্গলবার দেখা যায়, ট্রেড সেন্টারের সামনে চাদর বিছিয়ে চামড়ার বেল্ট, মানিব্যাগ সাজাচ্ছিলেন কুদ্দুস মিয়া। উচ্ছেদের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘কয়দিন করব? আমাগো বহার জায়গাও তো দেয় নাই। লোক আইলে চাদর বাইন্ধা সইরা যামু।’

বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের হকার মোতালেব বলেন, প্রথম দিকের মতো বেশি দৌড়ানি খেতে হয় না। দিনে দু-তিনবার আসে উচ্ছেদ করতে। এখন কেউ চাঁদা তুলতে আসে না। 

মতিঝিল, বায়তুল মোকাররম ও পল্টনের দিকটা ফাঁকা। গুলিস্তানের কয়েকজন হকার বলেন, বিভিন্ন অফিস থাকায় ওই এলাকাগুলোতে নজর বেশি, তাই হকাররা বসতে সাহস পান না। উচ্ছেদের জন্য হলুদ পোশাক পরা যে স্বেচ্ছাসেবক নামিয়েছিল ডিএসসিসি, সোম ও মঙ্গলবার তাঁদের উপস্থিতি ছিল কম। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ ও স্টেডিয়াম মার্কেটের সামনে দুজনকে দেখা যায়। ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম চৌধুরী বুধবার বলেন, ‘আজকেও টিম নেমেছে উচ্ছেদের জন্য। আমাদের দেখলেই ওরা দৌড়ে চলে যায়।’ স্বেচ্ছাসেবকদের ব্যাপারে বলেন, হকারদের সঙ্গে কিছু ঝামেলা হয়েছিল স্বেচ্ছাসেবকদের। এ ছাড়া যে দলটি কাজ করছে, তারাও ক্লান্ত। আগামী রোববার থেকে নতুন আরেকটি দল নামবে।