টিকিট কালোবাজারি ও বাড়তি ভাড়া আদায়?

ময়মনসিংহের গৌরীপুর রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের টিকিট বিক্রিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আন্তনগর ট্রেনের টিকিটের অধিকাংশ বিক্রি হচ্ছে কালোবাজারে। আর লোকাল ট্রেনের টিকিটে স্টেশন কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে।

গৌরীপুর স্টেশন থেকে আন্তনগর ট্রেনে চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে চলাচলকারী যাত্রীদের অভিযোগ, ময়মনসিংহ থেকে চট্টগ্রামগামী বিজয় এক্সপ্রেস, ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জগামী আন্তনগর হাওর এক্সপ্রেস ও মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের অধিকাংশ টিকিট কালোবাজারিদের হাতে চলে যায়। এর ফলে যাত্রীরা কালোবাজারিদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছেন। গৌরীপুর থেকে ঢাকার আন্তনগর ট্রেনের ভাড়া ১৪৫ টাকা হলেও কালোবাজারে তা কিনতে হচ্ছে ৩০০ টাকা করে। গৌরীপুর থেকে চট্টগ্রামের টিকিটও কালোবাজারে প্রায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। স্টেশনের কাউন্টারে গেলে বেশির ভাগ সময়ই আন্তনগর ট্রেনের টিকিট পাওয়া যায় না। আবার স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের একাধিক পানের দোকানেও মিলছে টিকিট।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন যাত্রী বলেন, গত শুক্রবার সকালে তিনি আন্তনগর হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট নিতে কাউন্টারে যান। সেখানে টিকিট নাই জানালে ফিরে আসেন। পরে একজন কালোবাজারির কাছ থেকে দ্বিগুণ টাকায় তিনি টিকিট কেনেন।

রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা যায়, গৌরীপুর থেকে চট্টগ্রামগামী বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনে গৌরীপুরের জন্য ১৪৬টি টিকিট বরাদ্দ। মোহনগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী আন্তনগর হাওর এক্সপ্রেসে ঢাকাগামী যাত্রীদের জন্য ২৭টি ও মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে ৪০টি টিকিট বরাদ্দ। কালোবাজারিরা লাইনে দাঁড়িয়ে এর বেশির ভাগ টিকিট কেনেন। আবার কখনো স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দিয়ে স্টেশন কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করে টিকিট সংগ্রহ করেন।

আন্তনগর ছাড়াও ময়মনসিংহ থেকে ভৈরব, মোহনগঞ্জ ও জারিয়া পথে চলাচলকারী লোকাল ট্রেনের টিকিটে স্টেশন কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। তাঁরা বলেন, লোকাল ট্রেনে গৌরীপুর থেকে নেত্রকোনার ভাড়া ৫ টাকা। অথচ নানা অজুহাতে স্টেশন কর্তৃপক্ষ ১০ টাকা করে আদায় করেন। এ রকমভাবে গৌরীপুর থেকে জারিয়া, মোহনগঞ্জ ও ভৈরব পর্যন্ত চলাচলকারী যাত্রীদের কাছ থেকে নির্ধারিত দামের চেয়ে দ্বিগুণ ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।

গৌরীপুর রেলওয়ে স্টেশনের বুকিং মাস্টার আনিছুর রহমান বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমরা নির্ধারিত ভাড়া রাখি। তবে আন্তনগর ট্রেনে টিকিট অনেক সময় কৌশলে বা কাউন্টারে লাইনে দাঁড়িয়ে কালোবাজারিরা সংগ্রহ করে নিয়ে যায়।’

স্টেশন মাস্টার প্রমোদ দাস গতকাল সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি এখানে সম্প্রতি যোগদান করেছি। এ পর্যন্ত টিকিট বিক্রিতে কালোবাজারি বা অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’