'জাতীয় দলিত কমিশন' গঠনের দাবি

রাজধানীতে এক সংলাপ অনুষ্ঠানে দলিত জনগোষ্ঠীর অধিকার ও স্বার্থ সংরক্ষণে ‘সংসদীয় ককাস’ ও ‘জাতীয় দলিত কমিশন’ গঠনের দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে সারা দেশে দলিত জনগোষ্ঠীর প্রতি যে বৈষম্য হচ্ছে, তা নিরসনে ২০১৫ সালের বৈষম্য বিলোপ আইনের খসড়া বাস্তবায়নেরও দাবি করেছেন বক্তারা।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আন্তর্জাতিক বর্ণবৈষম্য বিলোপ দিবস উপলক্ষে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ও বাংলাদেশ দলিত পরিষদ আয়োজিত ‘জাতীয় নীতি সংলাপে’ বক্তারা এসব দাবি জানান।
মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেন, একটি দেশের একটি গোষ্ঠীও যদি মনে করে, তারা বৈষম্য ও অবহেলার অসম্মানের মধ্যে বসবাস করে, তাহলে সেটা গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত। দলিত জনগোষ্ঠীর প্রতি বৈষম্যের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার এত বছর পরও আমরা সেই জায়গায় পৌঁছাতে পারিনি। এ জন্য আমাদের আত্মসমীক্ষার ব্যাপার আছে। নিজেদের দিকে তাকাবার বিষয় আছে। কেন পারিনি, এ জন্য সৎ ও স্বচ্ছ বিশ্লেষণ হওয়া প্রয়োজন।’
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন নিয়ে আমরা নিরাশ হয়েছি। খুব তড়িঘড়ি করে আইনটি পাস করা হলো।’ দলিত জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় ‘জাতীয় দলিত কমিশন’ গঠনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের দলিত জনগোষ্ঠীর যারা চরম দারিদ্র্যের শিকার, এই জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়।
অনুষ্ঠানে দলিত জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার রক্ষায় ‘সংসদীয় ককাস’ গঠনের দাবির বিষয়ে জাতীয় সংসদের হুইপ শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘যে এমপিরা এখানে এসেছেন, তাঁদের নিয়ে বৈষম্য বিলোপ আইনের খসড়া দ্রুত সংসদে তোলার চেষ্টা করব। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে একটি সংসদীয় ককাস গঠনের চেষ্টা করব।’
২০১৫ সালের বৈষম্য বিলোপ আইনের বিষয়ে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম সাংসদদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনাদের অভিজ্ঞতা, প্রজ্ঞা ও মেধা দিয়ে এই আইনটি সংসদে উত্থাপনের জন্য সহযোগিতা করুন। কারণ, আপনারা জনগণের প্রতিনিধি।’
বাংলাদেশ দলিত পরিষদের উপদেষ্টা মিলন দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সাংসদ মমতাজ বেগম, হোসনে আরা লুৎফা, রুস্তম আলী ফরাজী, মানবাধিকারকর্মী হামিদা হোসেন, নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির প্রমুখ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দলিত পরিষদের সমন্বয়ক বিকাশ দাস।