সরকারি আবাসন কেন্দ্রে প্রতিবন্ধী কিশোরীর মৃত্যু

বাগেরহাটে সরকারি নিরাপদ আবাসন কেন্দ্রে থাকা শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসক বলছেন, কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে ওই কিশোরী মারা গেছে। তবে আবাসন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ বলছে, কিশোরীর কিডনি রোগ সম্পর্কে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। ‘পেটে ব্যথায়’ সে মারা গেছে। তিন বছর ধরে পরিচয়হীন এই অসুস্থ কিশোরীটি আবাসন কেন্দ্রে বসবাস করলেও তাকে কখনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখানো হয়নি বলে জানা গেছে।

আজ বৃহস্পতিবার ভোরে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাবেয়া (১৫) নামের এই কিশোরীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় বাগেরহাট মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর।

বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ও সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক অরুণ কুমার মণ্ডল বলেন, ওই কিশোরীকে ভর্তি করার পর তার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় তার কিডনি রোগ শনাক্ত হয়।

এদিকে রাবেয়ার কিডনি রোগ সম্পর্কে জানা নেই বলে জানিয়েছেন বাগেরহাট সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. মঞ্জুরুল আলম। আজ দুপুরে এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ১৯ মার্চ বেলা ১১টার দিকে নিরাপদ আবাসন কেন্দ্রে থাকা প্রতিবন্ধী কিশোরী রাবেয়ার হঠাৎ করে পেটে ব্যথা শুরু হয়। পরে চিকিৎসার জন্য তাকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।
পেটে ব্যথায় তো কেউ হঠাৎ করে মারা যায় না, রোগের কোনো উপসর্গ কি আগে দেখা যায়নি—এমন প্রশ্নের জবাবে মঞ্জুরুল আলম বলেন, এর আগে কয়েকবার রাবেয়ার পেটে ব্যথা হয়েছিল। প্রস্রাবেও সমস্যা ছিল।
সে সময় কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখানো হয়েছিল কি না, জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আবাসন কেন্দ্রে সপ্তাহে একজন চিকিৎসক আসেন। তাঁকে দেখানো হয়েছিল। কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখানো হয়নি।
তিনি জানান, আদালতের নির্দেশে ২০১৪ সাল থেকে রাবেয়া নামের শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোরটি বাগেরহাট শহরের দশানীতে অবস্থিত সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত নিরাপদ আবাসন কেন্দ্রে ছিল। এখানে আসার পর কিশোরটির পরিচয় উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কেউ তার সন্ধানে এখানে আসেনি। তার পূর্ণাঙ্গ পরিচয় নিশ্চিত হতে না পারায় দুপুরে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের মাধ্যমে রাবেয়াকে সরুই কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।