দ. এশিয়া স্যাটেলাইটে যুক্ত হলো বাংলাদেশ

রাজধানীর বিটিআরসি কার্যালয়ে গতকাল ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে ‘সাউথ এশিয়া স্যাটেলাইট’বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ও বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ l ছবি: প্রথম আলো
রাজধানীর বিটিআরসি কার্যালয়ে গতকাল ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে ‘সাউথ এশিয়া স্যাটেলাইট’বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ও বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ l ছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১-এর আগেই মহাকাশে যাবে দক্ষিণ এশিয়া স্যাটেলাইট। অবস্থানগত ভিন্নতার কারণে মহাকাশে আগে গেলেও এটি বাংলাদেশের স্বার্থের জন্য সাংঘর্ষিক হবে না। ভারতের উদ্যোগে তৈরি স্যাটেলাইটটিতে তাই আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ।
এমন তথ্য জানানো হয়েছে ওই স্যাটেলাইটে বাংলাদেশের যোগদান নিয়ে চুক্তি সইয়ের অনুষ্ঠানে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) কার্যালয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার চুক্তিটি সই হয়। ‘অরবিট ফ্রিকোয়েন্সি কো-অর্ডিনেশন অব সাউথ এশিয়া স্যাটেলাইট প্রোপোজড অ্যাট ফোর্টি এইট ডিগ্রি ইস্ট’ শীর্ষক চুক্তিতে বাংলাদেশের পক্ষে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ এবং ভারতের পক্ষে ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা সই করেন।
চুক্তি সইয়ের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
স্যাটেলাইটটি তৈরির সব কার্যক্রম ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। কৃত্রিম উপগ্রহটি উৎক্ষেপণের সমস্ত ব্যয়ভার বহন করছে ভারত সরকার। এটি তৈরিতে খরচ হয়েছে ৪০ কোটি ডলার বা ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা। দক্ষিণ এশিয়া স্যাটেলাইটের ১২টি ট্রান্সপন্ডারের মধ্যে একটি বিনামূল্যে বাংলাদেশ ব্যবহার করতে পারবে। পাকিস্তান ছাড়া এ অঞ্চলের সব দেশই এতে যোগ দিচ্ছে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, এ চুক্তির ফলে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো স্যাটেলাইটের মতো উচ্চপ্রযুক্তির সহযোগিতায় যুক্ত হলো। এটি এ অঞ্চলের বিষয়ে বাইরের বিশ্বে একটি ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দেবে।
হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, দক্ষিণ এশিয়া স্যাটেলাইট এই অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তি বিনিময়ে ভারতের অঙ্গীকারের প্রতিফলন। খুব শিগগির এটির উৎক্ষেপণ সম্ভব হবে। অবস্থানগত ভিন্নতার কারণে বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইটের জন্য এটি সাংঘর্ষিক হবে না।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের জন্য দক্ষিণ এশিয়া স্যাটেলাইট সাংঘর্ষিক হবে না। কারণ, দুটি স্যাটেলাইট একে অন্যের কাছ থেকে ৭০ ডিগ্রি দূরবর্তী দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত।
দক্ষিণ এশিয়া স্যাটেলাইটে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে গত সোমবার একটি প্রস্তাব অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের কার্যক্রমে এই স্যাটেলাইট বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না, অনুমোদনে এমন শর্ত দেওয়া হয়েছে।
চলতি বছরের ১৬ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠানোর জন্য এখন কাজ চলছে। স্যাটেলাইটটির নির্মাণ, মহাকাশে উৎক্ষেপণ, গ্রাউন্ড স্টেশন তৈরির বেশির ভাগ কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। এ স্যাটেলাইটে ৪০টি ট্রান্সপন্ডার থাকবে। এর মধ্যে ২০টি বাংলাদেশের ব্যবহারের জন্য রেখে বাকিগুলো অন্য দেশের কাছে ভাড়া দেওয়া হবে।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদার, বিটিআরসি ও ভারতীয় হাইকমিশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।