লামায় বৃদ্ধ পাহাড়ি দম্পতি হত্যা: ভূমি বিরোধের জের?

বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাসিয়াখালী ইয়াংসায় গত শুক্রবার রাতে এক বৃদ্ধ দম্পতিকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ দুজনের লাশ উদ্ধার করেছে এবং প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, জমিজমা-সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে। লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন আজ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় আজ শনিবার পুলিশ দুজনকে আটক করেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম বলা যাবে না।

পুলিশ ও এলাকাবাসী বলেন, লামা উপজেলা সদর ১৫ কিলোমিটার দূরে ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের ইয়াংসা ছোটপাড়ায় সকালে ৭০ বছরের বৃদ্ধ ক্যহ্লাচিং মারমা (৭০) ও তাঁর স্ত্রী চিংহ্লামে মারমার (৬৫) লাশ নিজ বাড়িতে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। ক্যহ্লাচিং মারমা ফাসিয়াখালী ইউনিয়নে দুবার সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে তিনি এখন সদস্য নন।
পাড়ার কারবারি (পাড়প্রধান) ও ক্যহ্লাচিংয়ের মেয়ের জামাই অংশৈপ্রু মারমা বলেন, পাড়ার মধ্যে হলেও তাঁর শ্বশুর-শাশুড়ি আলাদা বাড়িতে থাকেন। সকালে তাঁরা ঘুম থেকে উঠছেন না দেখে বাড়িতে তাঁর মেয়ে অংমেচিং গিয়ে দেখেন একটি খাটে পাশাপাশি দুজনের রক্তাক্ত লাশ পড়ে রয়েছে। শ্বশুর ক্যহ্লাচিংকে গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে ও মাথায় আঘাত করে এবং শাশুড়ি চিংহ্লামেকে বুকে ও পেটে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। বাড়ির আলমারি, সিন্ধুক ও অন্যান্য জিনিসপত্র তছনছ অবস্থায় পাওয়া গেছে।
ফাসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ইয়াংসা ছোটপাড়া এলাকার বর্তমান সদস্য আপ্রুসি মারমা বলেন, পাঁচ মাস আগেও ক্যহ্লাচিং মারমার বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেছে। কয়েকজনের সঙ্গে ভূমি বিরোধ রয়েছে। এ ঘটনার জের ধরে হত্যার ঘটনা ঘটেছে নাকি অন্য কারণে হয়েছে তা তদন্ত করা দরকার।
লামার ওসি বলেন, তাঁরা লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সকাল থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
আজ জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক ও পুলিশ সুপার (এসপি) সঞ্জিত কুমার রায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এসপি বলেন, ভূমি বিরোধকে কেন্দ্র করে সাবেক ইউপি সদস্যের পরিবারের মধ্যে ও পরিবারের বাইরের বেশ কয়েকজনের সঙ্গে বিরোধ রয়েছে। সেই বিষয়গুলোকে নিয়ে প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।