শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে বিধির বাস্তবায়ন দরকার

অতি শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা দরকার বলে এক সভায় পরামর্শ দিয়েছেন শব্দ প্রকৌশল বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, বিদ্যমান বিধির বাস্তবায়ন হলেই শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পরিবেশ অধিদপ্তরের সভাকক্ষে শব্দদূষণ প্রতিরোধে কার্যকর পদ্ধতি ও প্রযুক্তির ব্যবহারবিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলা হয়। পরিবেশ অধিদপ্তর ও শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাজ করা জার্মানভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সাউন্ডপ্ল্যান যৌথ উদ্যোগে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে।

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কাজী সারওয়ার ইমতিয়াজ হাশমী। সভার শুরুতে তিনি বলেন, ‘অতি শব্দ (নয়েজ) নিয়ে আমরা অনেক বড় সমস্যায় পড়েছি। আমাদের এ সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। শব্দদূষণ বিধিমালায় সচেতনতা তৈরির কথা বলা আছে। আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

সাউন্ডপ্ল্যানের আন্তর্জাতিক পরামর্শক মিশেল রোসমোলেন অতি শব্দদূষণ কী, কীভাবে হয় এবং এর ক্ষতিকর দিক উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, অতি শব্দের কারণে জানা বিষয়গুলো হচ্ছে কম সচেতনতা, শ্রবণক্ষমতা কমে যাওয়া। অথচ অতি শব্দের কারণে উচ্চ রক্তচাপ, বিরক্তি, মানসিক চাপ, হৃদ্‌রোগও হয়—এগুলো মানুষ জানে না।

মিশেল রোসমোলেন আরও বলেন, এই অতি শব্দের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ২০ থেকে ৬৯ বছর বয়সী ২ কোটি ৬০ লাখ মানুষ উচ্চমাত্রায় শ্রবণশক্তি হারাচ্ছে। এ ছাড়া অতি শব্দে কর্মক্ষমতাও কমে যায়।

সাউন্ডপ্ল্যানের বাংলাদেশি পরামর্শক প্রকৌশলী এ আহসান হাবীব বলেন, ‘আমরা সব সময় ঘরের বাইরের শব্দদূষণ নিয়ে কথা বলি। কিন্তু ভেতরের শব্দদূষণ নিয়ে কথা বলি না। যেমন জেনারেটর যন্ত্রের শব্দ। বাংলাদেশে যে যন্ত্রগুলো আসে বিদেশ থেকে, সেসবের শব্দ নির্গমনের নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষা করে আনা উচিত।’ শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আইন বাস্তবায়নে আমরা বেশ দুর্বল। আইন যতটুকু আছে, ততটুকু মানলেই হবে। এ ছাড়া জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করাও দরকার।’

মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সহযোগী অধ্যাপক নাজমুল ইমাম, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাসসহ পরিবেশ অধিদপ্তর, গণপূর্ত অধিদপ্তর ও বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।