এই হাসিমাখা মুখ কি হারিয়ে যাবে?

মায়াভরা ফোকলা দাঁতের হাসিমাখা মুখ। ফুটফুটে শিশুটিকে দেখলে মনে হয় না ওর শরীরে বাসা বেঁধেছে মরণব্যাধি। আট মাস বয়সেই আনিশা রহমান নামের শিশুটির থ্যালাসেমিয়া ধরা পড়ে। বর্তমানে ওর বয়স দুই বছর আট মাস। প্রতি মাসে অন্যের দান করা রক্তে এখনো বেঁচে আছে শিশুটি।

চিকিৎসকেরা জানিয়ে দিয়েছেন, আনিশাকে সুস্থ করে তুলতে চিকিৎসার জন্য ভারতের চেন্নাইয়ে নিতে হবে। সে জন্য কমপক্ষে ৩০ লাখ টাকা প্রয়োজন। সন্তানকে ঘাতকব্যাধির গ্রাস থেকে ফেরানোর জন্য করুণ আর্তি নিয়ে দেড় বছর ধরে মানুষের দ্বারে-দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন আনিশার দরিদ্র বাবা আওছাফুর রহমান। গত দেড় বছরে মাত্র লাখ দেড়েক টাকা জোগাড় করতে পেরেছেন। চোখের সামনে একমাত্র সন্তানের তিলে তিলে শেষ হয়ে যাওয়া থেকে বাঁচাতে এখনো দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি।

আওছাফুরের বাড়ি খুলনার পাইকগাছা উপজেলার সোলাদানা ইউনিয়নের বেতবুনিয়া গ্রামে। সামান্য বেতনে অস্থায়ীভাবে খুলনা নগরের সরকারি মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজের অধ্যক্ষের কার্যালয়ে অফিস সহকারী হিসেবে কাজ করেন তিনি। বর্তমানে থাকেন গল্লামারী এলাকায় একটি ছোট্ট ভাড়া বাসায়। আওছাফুর একমাত্র সন্তানের চিকিৎসার খরচ চালাতে ঘর ওভিটেমাটি বাদে গবাদিপশু থেকে শুরু করে সব বেঁচে দিয়েছেন।

খুলনা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ শারাফাত হোসাইন বলেন, থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত আনিশাকে প্রতি মাসে একাধিকবার রক্ত নিতে হচ্ছে। অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনই থ্যালাসেমিয়া রোগের স্থায়ী চিকিৎসা। বর্তমানে এই চিকিৎসার খরচ ৩০-৪০ লাখ টাকা।

এমন ফুটফুটে একটা শিশু চিকিৎসার অভাবে মারা যাবে, এমনটি হতে পারে না উল্লেখ করে সরকারি এম এম সিটি কলেজের অধ্যক্ষ ইমান আলী সহায়তায় এগিয়ে আসতে বিত্তবান ব্যক্তিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিরা যদি এগিয়ে আসেন, তাহলে ফুটফুটে শিশুটি হয়তো বেঁচে যাবে।

আনিশার চিকিৎসায় সহায়তার জন্য ব্যাংকে একটি হিসাব খোলা হয়েছে। আওছাফুর রহমান, হিসাব নম্বর: ০২০০০০২১৭০৫৮৮ অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড, শামসুর রহমান রোড শাখা, খুলনা।