তিন মাসে 'ক্রসফায়ারে' নিহত ৪৪

মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) জানিয়েছে, গত তিন মাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ৫৯ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু ‘ক্রসফায়ারে’ মারা গেছেন ৪৪ জন। গতকাল শুক্রবার প্রতিষ্ঠানটির ‘মানবাধিকার লঙ্ঘনের সংখ্যাগত প্রতিবেদনে’ এ তথ্য জানানো হয়। আটটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদ ও আসকের সংগ্রহ করা তথ্যের মাধ্যমে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে এ বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের তথ্য দেওয়া হয়েছে।
গত বছর একই সময়ে (২০১৬ সালের জানুয়ারি-মার্চ) আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা ছিল ৩২। এর মধ্যে ক্রসফায়ারে ২৭ জন নিহত হন বলে আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল।
আসকের গতকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বছরের প্রথম তিন মাসে ‘ক্রসফায়ারে’ নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে পুলিশের ‘ক্রসফায়ারে’ ৩১ জন, গোয়েন্দা পুলিশের ‘ক্রসফায়ারে’ ৬ জন ও র্যা বের ‘ক্রসফায়ারে’ ৭ জন মারা গেছেন। এই সময়ে রাজনৈতিক সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন ১৩ জন। এর মধ্যে ১১ জনই মারা গেছেন আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠনের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে। এ ছাড়া ৯৩ জন নারী ধর্ষণ ও ৩২১ শিশু বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
এই সময়ে সাদাপোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে ২৫ জনকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে তাঁদের মধ্যে চারজন ফিরে আসেন ও একজনের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে মৃত্যু সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশের সঙ্গে ‘ক্রসফায়ারে’ নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ২১ জন গ্রেপ্তারের আগে এবং ১০ জন গ্রেপ্তারের পরে মারা গেছেন। র্যা বের ‘ক্রসফায়ারে’ নিহত ব্যক্তিদের সবাই মারা গেছেন গ্রেপ্তারের আগে। এ ছাড়া গ্রেপ্তারের আগে র্যা বের গুলিতে ১ জন, পুলিশের গুলিতে ১০ জন, গ্রেপ্তারের পর পুলিশের নির্যাতনে ১ জন এবং হার্ট অ্যাটাকে র্যা বের হেফাজতে ১ জন মারা গেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধর্ষণ ও শিশু নির্যাতন ছাড়াও যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে এক নারী ও এক পুরুষ নিহত হয়েছেন। শিশু নির্যাতন ও হত্যা সম্পর্কে বলা হয়েছে, এ সময়ে ৭২ শিশু হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে, ১৭ শিশু আত্মহত্যা করেছে, ৩৮ শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে সাত শিশুর।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এই তিন মাসে সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে একজন ও শারীরিক নির্যাতনে দুজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১১ জন ও অপহরণের শিকার হয়েছেন ১৫ জন।