কমিটিতে রাখার আশ্বাসে টাকা নেন প্রধান শিক্ষক?

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মধ্যপাড়া ইউনিয়নের অলিয়ারচালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য করার আশ্বাস দিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে শাহিদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
শাহিদুল ইসলামের বাড়ি উপজেলার অলিয়ারচালা গ্রামে। তাঁর অভিযোগ, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম ব্যবস্থাপনা কমিটিতে বিদ্যোৎসাহী সদস্য করার জন্য ৫০ হাজার টাকা নিয়েছেন। গত এক বছরে তিনি বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে বিদ্যালয়ের উন্নয়নের কথা বলে প্রায় তিন লাখ টাকা অনুদান নিয়েছেন। এ ছাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে পাওয়া ৪০ হাজার টাকা ও শিশু শ্রেণির ছাত্রছাত্রীর জন্য পাঁচ হাজার টাকা অনুদান পেয়েছিলেন। বিদ্যালয়ের উন্নয়নের কোনো কাজ না করে এসব অর্থ তিনি আত্মসাৎ করেছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মার্চের শুরুতে বিদ্যালয়ের বিদ্যোৎসাহী সদস্য নির্বাচন করা হয়। ২১ মার্চ ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। শাহিদুল ইসলাম ২২ মার্চ কালিয়াকৈর থানায় সিরাজুল ইসলামসহ কয়েকজনের নামে পৃথক দুটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন নিয়ে গত এক সপ্তাহ সিরাজুল ইসলাম ও শাহিদুল ইসলাম গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
শাহিদুল ইসলাম বলেন, বিদ্যোৎসাহী সদস্য করার জন্য প্রধান শিক্ষক ৫০ হাজার টাকা অনুদান নিয়েছিলেন। পরে আরেকজনের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এখন টাকা ফেরত চাইলে তিনি নানা টালবাহানা করছেন।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সিরাজুল ইসলাম বলেন, শাহিদুল ইসলামের কাছ থেকে কোনো অনুদানের টাকা গ্রহণ করা হয়নি। তাঁকে বিদ্যোৎসাহী সদস্য না করায় অনেকের কাছে অভিযোগ দিচ্ছেন। এসব অভিযোগ সত্য নয়।
বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গত বছর স্কুলের ক্রীড়া প্রতিযোগিতার জন্য শাহিদুল ইসলামের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। তখন শাহিদুলকে সভাপতি বানানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এ বছর শাহিদুলকে কেন সভাপতি করা হয়নি, তা জানি না।’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শিখা বিশ্বাস বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের বিষয়ে দুই পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। ইউএনও, উপজেলা চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানিয়েছি। এলাকায় বসে মীমাংসা করা হবে।’
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন, বিষয়টি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত করার জন্য বলা হয়েছে।