মঠবাড়িয়ায় কেন্দ্রসচিব ও কক্ষ পরিদর্শক লাঞ্ছিত

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় এইচএসসি পরীক্ষায় অতিরিক্ত সময় চেয়ে না পাওয়ার জের ধরে এক পরীক্ষার্থীর স্বজনদের হাতে কেন্দ্রসচিব ও কক্ষ পরিদর্শকের লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার সাফা ডিগ্রি কলেজের ভেন্যু সাফা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার পর ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং পুলিশ প্রহরায় উত্তরপত্র নিয়ে শিক্ষকেরা কেন্দ্র ত্যাগ করেন।
ওই কেন্দ্রের কক্ষ পরিদর্শক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক সীমা রানী জানান, গতকাল রোববার এইচএসসি বাংলা প্রথম পর্ব নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা শেষে বেলা একটার দিকে কক্ষ পরিদর্শক উত্তরপত্র নেওয়ার সময় সাফা ডিগ্রি কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ছাত্রী মোসা. শান্তা আক্তারসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী নৈর্ব্যক্তিকের উত্তরপত্রের বৃত্ত ভরাটের জন্য অতিরিক্ত সময় দাবি করে। এ সময় কক্ষ পরিদর্শক সময় না দিয়ে উত্তরপত্র নিয়ে নেন। পরীক্ষা শেষে শান্তা বিষয়টি তার ভাই ছাত্রলীগের কর্মী শুভকে জানায়। এ সময় শুভসহ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পরীক্ষার কেন্দ্রে ঢুকে কক্ষ পরিদর্শক সীমা রানীকে লাঞ্ছিত করেন। এ সময় কেন্দ্রসচিব ও সাফা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. হারুন অর রশীদ ওই শিক্ষককে উদ্ধার করতে গেলে তাঁকেও লাঞ্ছিত করে পরীক্ষার উত্তরপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর পুলিশ প্রহরায় পরীক্ষার উত্তরপত্র নিয়ে কেন্দ্রসচিব কেন্দ্র ত্যাগ করেন।
পরীক্ষার্থী শান্তা আক্তার বলে, ‘সময় শেষ হওয়ার আগে কক্ষ পরিদর্শক উত্তরপত্র নিয়ে যান। এতে আমিসহ অনেকেই নৈর্ব্যক্তিকের সব উত্তর দিতে না পেরে বৃত্ত ভরাটের জন্য সময় চাই। কিন্তু কক্ষ পরিদর্শক সময় দেননি।’
চারজন পরীক্ষার্থী অভিযোগ করে, পরীক্ষা শুরু হওয়ার পাঁচ মিনিট পর নৈর্ব্যক্তিকের প্রশ্ন দেওয়া হয়। আবার সময় শেষ হওয়ার আগে উত্তরপত্র নেওয়া হেয়।
কেন্দ্রসচিব মো. হারুন অর রশীদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, যথাসময়ে উত্তরপত্র নেওয়া হয়। ছাত্রীদের অভিযোগ সঠিক নয়। শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
শুভর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাফা ডিগ্রি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘পরীক্ষার কেন্দ্রে শুভর সঙ্গে দুই শিক্ষকের কথা-কাটাকাটি হয়েছে। শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করা হয়নি। খবর পেয়ে আমিসহ ধানীসাফা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি।’
মঠবাড়িয়া থানার ওসি কে এম তারিকুল ইসলাম বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম ফরিদ উদ্দিন বলেন, পরীক্ষাকেন্দ্রে শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনার লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।