সানজিদার সমর্থন উল্টো ফল আনতে পারে

ঢাকা-৪ আসনে আওলাদ ও বাবলার নির্বাচনী পোস্টারে ছেয়ে যাওয়া জুরাইন এলাকার দৃশ্য ।  প্রথম আলো
ঢাকা-৪ আসনে আওলাদ ও বাবলার নির্বাচনী পোস্টারে ছেয়ে যাওয়া জুরাইন এলাকার দৃশ্য । প্রথম আলো

রাস্তায়, অলিতে-গলিতে প্রার্থীদের পোস্টার। মাইকে চলছে নির্বাচনী প্রচারণা। দোকানদার, পাড়া-মহল্লায় যাকে পাচ্ছেন, তাঁর কাছেই ভোট চাইছেন প্রার্থীরা। কুশল বিনিময় করে চাইছেন দোয়া। এ দৃশ্য ঢাকা-৪ আসনের। ভোটের দুই দিন আগে গতকাল বৃহস্পতিবার এ আসনের চারটি ওয়ার্ড ও একটি ইউনিয়ন ঘুরে এ দৃশ্য দেখা গেছে।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে দুজন প্রার্থী। দুজনই প্রথমবারের মতো এ আসনে লড়ছেন। একজন মহাজোট থেকে মনোনীত প্রার্থী জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন (বাবলা)। তাঁর প্রতীক লাঙ্গল। আরেকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী আওলাদ হোসেন। লড়ছেন হাতি প্রতীক নিয়ে। আওলাদ প্রথম প্রার্থী হলেও আবু হোসেন এরশাদ সরকারের আমলে দুবার সাংসদ হয়েছিলেন।
তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সহকারী ছিলেন আওলাদ হোসেন। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রলীগের এ নেতার আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ থাকলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার কারণে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
স্থানীয় বেশ কয়েকজন ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, আওলাদ জুরাইন এলাকার হলেও আবু হোসেন এ আসনের বাসিন্দা নন। তাঁর বাড়ি গোপীবাগে। তবে আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা তাঁর পক্ষে ইতিমধ্যে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছেন। গতকাল সকালে জুরাইন রেলগেটে তাঁর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিতে দেখা গেছে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য তোফায়েল আহমেদ, কামরুল ইসলাম ও সানজিদা খানমের মতো নেতাদের।
এ আসনের মধ্যে পড়েছে ঢাকা সিটি করপোরেশন দক্ষিণের ৪৭, ৫১, ৫২, ৫৩, ৫৪ ওয়ার্ড এবং শ্যামপুর ইউনিয়ন। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুসারে, এই আসনে ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ২৮ হাজার ৫১৭ জন। গত নির্বাচনে এই আসনে প্রার্থী ছিলেন ১১ জন। নৌকা মার্কা থেকে ৯৭ হাজার ৮২৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন সানজিদা খানম।
জুরাইন ঋষিপাড়ায় কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা শান্তি রঞ্জন ঘোষের (৭০) সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনে মজা নাই, এর পরও কোন প্রার্থী পাস করব বলা কঠিন। যে প্রার্থী জলাবদ্ধতা সমস্যা সবার আগে সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিব আমরা তার লগে।’
তবে সেই প্রতিশ্রুতি এর আগেও ছিল, এমনই জানালেন কয়েকজন ভোটার। তাঁরা জানালেন, এলাকায় জলাবদ্ধতাসহ নানা সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আওয়ামী লীগের সানজিদা খানম নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু গত পাঁচ বছরে তিনি জলাবদ্ধতা তো দূর করেনইনি, অন্য উন্নয়নেও তেমন তৎপরতা দেখাননি। স্থানীয় চার থেকে পাঁচজন ভোটার আরও জানান, আবু হোসেনের পক্ষে সানজিদা খানমের সমর্থন উল্টো ফল আনতে পারে। কারণ সানজিদা নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকার লোকজনদের প্রত্যাশা পূরণ করেননি। তবে আবু হোসেন জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভোটারদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে আমার প্রতি।’