নির্বাচনে হেরে বন্ধ করলেন স্কুলে যাতায়াতের রাস্তা!

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার জিনিয়া ওমর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটি এক ব্যক্তি বন্ধ করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুই সপ্তাহ আগে বিদ্যালয়টির ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনে সদস্যপদে পরাজিত হওয়ার পর তিনি এ কাজ করেন।

বিদ্যালয় ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্র জানায়, ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনে দুটি সদস্যপদে মোশারফ হোসেন, রফিকুল ইসলাম, নবীরুল ইসলাম ও দানেস আলী প্রার্থী হন। গত ২৮ মার্চ নির্বাচনে রফিকুল ইসলাম ও নবীরুল ইসলাম নির্বাচিত হন। পরদিন মোশারফ হোসেন তাঁর বাড়ির পাশ দিয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াতের রাস্তাটি কেটে চলাচল বন্ধ করে দেন। রাস্তাটি দিয়ে তিনি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের যেতে দিচ্ছেন না। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।

পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলে, ‘সদস্যদের নির্বাচিত করেছেন অভিভাবকেরা। তিনি (মোশারফ হোসেন) নির্বাচনে ফেল করে ক্ষুব্ধ হয়ে আমাদের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি বন্ধ করে দিয়েছেন। তারপরও কোনো শিক্ষার্থী রাস্তাটি দিয়ে চলাচলের চেষ্টা করলে তাঁর পরিবারের লোকজন লাঠি নিয়ে ধাওয়া দেয়। দুই সপ্তাহ ধরে সব শিক্ষার্থী ধানখেত ও অন্য মানুষের বাড়ির অলিগলি দিয়ে চলাচল করছে। এতে আমরা দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছি।’

ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘একজন মানুষ পরাজিত হয়ে এমন কাজ করতে পারেন, জানতাম না। শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও শিক্ষকেরা তাঁকে অনেকভাবে বোঝানোর চেষ্টাও করেন। কিন্তু তিনি অনড়।’

মোশারফ হোসেন গতকাল মঙ্গলবার বলেন, ‘নির্বাচনে শিক্ষকেরা কারচুপি করে দুজনকে নির্বাচিত করেছেন। আমার বাড়ির কাছের স্কুল, পরাজিত হওয়ার কারণ ছিল না। রাস্তাটি আমার জমির মধ্যে। শিক্ষার্থীদের যাওয়ার জন্য পায়ে চলার রাস্তা দিতে পারি। কিন্তু বিদ্যালয়ের যানবাহন যেতে দেব না।’

প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেন বলেন, ‘সদস্যদের নির্বাচিত করেছেন অভিভাবকেরা। তা ছাড়া রাস্তাটির পুরো জমি খাস খতিয়ানে রয়েছে। তাঁর বাড়ির কাছে হওয়ার কারণে তিনি রাস্তাটি বন্ধ করেছেন। এ বিষয়ে ১ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু হাসান সিদ্দিকির কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।’

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আফতাব উদ্দিন গতকাল বলেন, ‘বিষয়টি শুনে গত সোমবার সকালে ওই বিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। ওই ব্যক্তির সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি শিক্ষার্থীদের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবেন না। আমি থাকা অবস্থায় রাস্তাটি তিনি খুলেও দেন।’

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল ইউএনওর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ধরেননি।