ঈশ্বরগঞ্জ শহরে ১৪৪ ধারা, সাবেক সাংসদ ঘুরলেন গ্রামে

১৪৪ ধারা জারি করার পর ময়মনসিংহের নান্দাইল শহরের মোড়ে সাঁজোয়া যান নিয়ে পুলিশের সতর্ক অবস্থান। ছবিটি ঈশ্বরগঞ্জের সড়ক বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সামনে থেকে গতকাল বেলা আড়াইটায় তোলা l প্রথম আলো
১৪৪ ধারা জারি করার পর ময়মনসিংহের নান্দাইল শহরের মোড়ে সাঁজোয়া যান নিয়ে পুলিশের সতর্ক অবস্থান। ছবিটি ঈশ্বরগঞ্জের সড়ক বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সামনে থেকে গতকাল বেলা আড়াইটায় তোলা l প্রথম আলো

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক সাংসদ মো. আবদুছ ছাত্তারের সংবর্ধনাকে কেন্দ্র করে দলটির দুই পক্ষের উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে পৌর শহরে গতকাল মঙ্গলবার ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।

একই সঙ্গে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পৌর শহর ও এর আশপাশের তিন কিলোমিটারের মধ্যে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গতকাল সকাল আটটা থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিতু মরিয়মের বরাত দিয়ে মাইকে এ ঘোষণা প্রচার করা হয়। পরে ইউএনও সাংবাদিকদের কাছে ১৪৪ ধারা জারি করার সত্যতা নিশ্চিত করেন। এদিন শহরের মোড়ে মোড়ে সাঁজোয়া যান নিয়ে পুলিশকে সতর্ক অবস্থানে দেখা যায়।

এদিকে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক এবং ময়মনসিংহ-৮ (ঈশ্বরগঞ্জ) আসনের সাবেক সাংসদ আবদুছ ছাত্তার গতকাল বিকেলে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন সফর করেন। তিনি এসব এলাকায় পথসভা করেন।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বদরুল আলম খান বলেন, ‘সাবেক সাংসদ আবদুছ ছাত্তার ইউনিয়ন পর্যায়ে গণসংযোগ করছেন বলে জেনেছি।’

দলীয় সূত্র জানায়, আবদুছ ছাত্তার পুনরায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক হওয়ায়ঈশ্বরগঞ্জবাসীর ব্যানারে সংবর্ধনার আয়োজন করে পৌর আওয়ামী লীগ। এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলটির পৌর কমিটির সভাপতি ও আবদুছ ছাত্তারের স্ত্রীর বড় ভাই হাবিবুর রহমান। গতকাল এ সভা হওয়ার কথা ছিল। এর প্রতিবাদে রোববার বিকেলে শহরে বিক্ষোভ মিছিল হয়। এর নেতৃত্বে ছিলেন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ। সোমবারও এ পক্ষটি মিছিল করে। এরপরও অপর পক্ষ সংবর্ধনার প্রস্তুতি অব্যাহত রাখে। পরে জেলা আওয়ামী লীগ সংবর্ধনা স্থগিত করার নির্দেশ দেয়।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও আবদুছ ছাত্তারের পক্ষের নেতা হিসেবে পরিচিত মো. বদরুল আলম বলেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ও তাঁদের নির্দেশে আমরা সংবর্ধনা সভা স্থগিত করেছি। এ নির্দেশ জানাজানি হওয়ার পর হাজারো নেতা-কর্মী বিক্ষুব্ধ হন। আমরা তাঁদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছি। তারপরও প্রশাসন শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে আমাদের চূড়ান্ত অপমান করেছে।’ তিনি সংবর্ধনা সভার বিরোধিতাকারীদের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, জামায়াত-বিএনপির কর্মীদের মদদে দুবারের নির্বাচিত সাংসদের সভা পণ্ড করে খারাপ নজির স্থাপন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কেউ যদি প্রমাণ করতে পারেন আমরা বিএনপি-জামায়াতের মদদে রাজনীতি করছি, তাহলে পদত্যাগ করে বাড়িতে গিয়ে বসে থাকব। এসব অভিযোগ তাঁদের মুখে শোভা পায় না। এখন রাজনীতি করতে হলে মাঠে–ময়দানে পরিশ্রম করতে হবে।’

সংশোধনী: একই বিষয় নিয়ে গতকাল প্রকাশিত প্রতিবেদনে মোয়াজ্জেম হোসেনকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে তিনি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক। অনিচ্ছাকৃত এ ভুলের জন্য দুঃখিত। বি.স.।