প্রার্থীদের অর্ধেকই ব্যবসায়ী

আসন্ন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ৫৪০ জনের মধ্যে ২৮২ জন (৫২ শতাংশ) ব্যবসায়ী। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতদের মধ্যেও ব্যবসায়ী ৫২ শতাংশ। নাগরিক সংগঠন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) বিশ্লেষণে দেখা গেছে, কিছু প্রার্থী একাধিক পেশা থেকে আয় করলেও হলফনামার আয়ের নির্দিষ্ট ঘরে একটি পেশার কথা উল্লেখ করেছেন।
সুজন বলছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ১২-কে ধারা অনুযায়ী সরকারের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্কে যাঁরা লিপ্ত থাকেন, তাঁরা নির্বাচন করতে পারেন না। কিন্তু এ ধরনের অনেক প্রার্থীই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
‘দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীগণের তথ্য প্রকাশ’ বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সুজন এ তথ্য তুলে ধরে।
সুজনের বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রার্থীদের ২৭১ জন (৫০ শতাংশ) আয়কর দেন। মাত্র ৫৮ জন প্রার্থী (১০ শতাংশ) দুই লাখ টাকা বা এর কম আয় করেন। প্রার্থীদের মধ্যে ৮৬ জনের আয়কর-সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র পাওয়া গেলেও এ-সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যায়নি। প্রার্থীদের ১০ শতাংশের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।
প্রার্থীদের হলফনামার তথ্য তুলে ধরেন সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।
সুজনের ভাষ্য, ১৯৪ (৩৫ শতাংশ) প্রার্থীর বিরুদ্ধে অতীতে মামলা ছিল। বর্তমান মামলার চেয়ে প্রার্থীদের অতীতের মামলাই বেশি। এটা প্রমাণ করে, অধিকাংশ প্রার্থী ক্ষমতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার কারণে পরিসংখ্যানটি এমন হয়েছে।
৫৪৩ জনের মধ্যে ৫৪০ জনের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। প্রার্থীদের ৭১ শতাংশ স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পাস করেছেন। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার জন্য যাঁরা অপেক্ষমাণ আছেন, তাঁদের মধ্যে এই হার ৮২ শতাংশ। প্রার্থীদের মধ্যে এসএসসি বা এর কম শিক্ষাগত যোগ্যতা রয়েছে ১৭ শতাংশ প্রার্থীর।
এ ছাড়া ৩২ শতাংশ প্রার্থীর বার্ষিক আয় পাঁচ লাখ থেকে ২৫ লাখ টাকা। বেশির ভাগ প্রার্থীর সম্পদই কোটি টাকার ওপরে। অনেক প্রার্থী তাঁদের সম্পদের মূল্য উল্লেখ না করায় তাঁদের প্রকৃত সম্পদের পরিমাণ নিরূপণ করা যায়নি। এ ছাড়া ৫০ শতাংশ প্রার্থী আয়কর দেন বলে উল্লেখ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বিচারপতি কাজী এবাদুল হক। বক্তব্য দেন আইন বিশেষজ্ঞ শাহদীন মালিক, অধ্যাপক অজয় রায়, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।
নির্বাচন নিয়ে নানা মত: সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে আলোচকেরা ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করেন। সুজনের নির্বাহী সদস্য আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, তামাশায় যেমন অভিনেতা-অভিনেত্রী থাকে, তেমনি এই নির্বাচনের অংশগ্রহণকারীরা নির্বাচন নামের তামাশায় অভিনয় করছেন। শাহদীন মালিকের এই মত কি সুজনের— সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘না, এটা ওনার (মালিকের) ব্যক্তিগত মতামত।’