ঘর, রাস্তা ডুবেছে ময়লা পানিতে

মিরপুর-১৪ নম্বরের বাগানবাড়ি খালের পাশে গড়ে উঠেছে বাগানবাড়ি বস্তি। খালে বারোয়ারি বর্জ্যের পুরু স্তর জমে স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে সামান্য বৃষ্টি হলেই বস্তির ঘর এবং বস্তিতে যাতায়াতের সরু রাস্তাটি ময়লা পানিতে ডুবে যায়। ফলে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয় বস্তির বাসিন্দাদের।

আজ সোমবারের বৃষ্টিতেও বস্তির বাসিন্দারা একই রকম ভোগান্তিতে পড়েন। মিরপুর-১৪ নম্বর বাসস্ট্যান্ডে মার্ক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পাশে সিএনজি স্টেশনের পাশে বাগানবাড়ি খালটি অবস্থিত। খালের পাশ দিয়ে সরু একটুখানি রাস্তা দিয়ে বাগানবাড়ি বস্তিতে যাতায়াত করতে হয়।
দুপুর ১২টার দিকে খালপাড়ে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টিতে খালে পানি বেড়ে যাওয়ায় বস্তিতে যাতায়াতের রাস্তা ডুবে গেছে। বস্তির লোকজন ময়লা পানি মাড়িয়ে বস্তিতে যাতায়াত করছেন। স্কুলের শিক্ষার্থীদের পানি পার হয়ে স্কুলে যেতে দেখা যায়।
বস্তিতে পোশাক কারখানার শ্রমিক, রিকশাচালকেরা বেশি থাকেন। বেলা একটার দিকে পোশাক কারখানায় দুপুরের বিরতির সময় অনেকেই খাবার খেতে আসেন। বস্তিতে প্রবেশের রাস্তা ময়লা পানিতে ডুবে থাকায় তাঁদের অনেকে বস্তিতে না গিয়েই আবার কাজে ফিরে যান। অনেকে বাধ্য হয়ে ময়লা পানি পার হয়ে বস্তিতে যান।
পানি পার হয়ে বস্তিতে ফিরবেন কি না, সেটি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলেন আকলিমা বেগম। তিনি বলেন, ‘বৃষ্টি হলে ঘরে কোমরপানি হয়। কয়েক বছর ধরে বৃষ্টি হলেই এই ভোগান্তি। এখন ময়লা পানি পার হয়ে ঘরে গেলে আবার গার্মেন্টসে যাওয়ার সময় ময়লা পাড়াতে হবে।’
বস্তার ভেতরে ককশিট ভরে একধরনের ভেলা বানিয়েছেন বস্তির বাসিন্দারা। এমন একটি ভেলায় চড়ে বস্তির কাছাকাছি গিয়ে দেখা যায়, বস্তির ঘরে পানি ঢুকেছে। বাসিন্দারা ঘরের দরজায় বসে আছেন। ময়লা-আবর্জনার সঙ্গে মিশে পানি থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
বস্তির একাধিক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, খালের শেষ মাথায় বাঁশ, টিন দিয়ে অর্ধশতাধিক ঘর তোলা হয়েছে। খালের পানিপ্রবাহ আটকে কয়েক শ বাঁশ গাঁথুনি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। তারপর থেকে পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। খালে ময়লা জমতে থাকে।
খালের মধ্যে প্লাস্টিক বোতল, টিন, পলিথিনসহ বারোয়ারি বর্জ্য জমে আছে। এত পুরু ময়লা-আবর্জনা জমেছে, তা যে খাল দেখে বোঝার উপায় নেই। ময়লার ওপরে কতগুলো মুরগি চরে বেড়াতে দেখা যায়।
কাফরুল, কচুক্ষেত, ভাষানটেক, ইব্রাহিমপুর ও মিরপুর এলাকার নালার পানি এই বাগানবাড়ি খালটি দিয়ে নামে। খালে পানি প্রবাহিত হতে না পারায় সব ময়লা এসে বাগানবাড়ি বস্তির সামনের অংশে জমছে। এই ময়লা-আবর্জনা এবং অপরিচ্ছন্ন পানির কারণে মশার প্রজননক্ষেত্র হয়ে পড়েছে খালটি।