পীরগঞ্জে টাঙ্গন নদ থেকে চলছে অবৈধ বালু তোলা

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জের টাঙ্গন নদ ও শালবন হুমকিতে ফেলে নদের বালু তুলে ট্রাক্টরে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি বাজারদহা টাঙ্গন নদ থেকে তোলা ছবি l প্রথম আলো
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জের টাঙ্গন নদ ও শালবন হুমকিতে ফেলে নদের বালু তুলে ট্রাক্টরে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি বাজারদহা টাঙ্গন নদ থেকে তোলা ছবি l প্রথম আলো

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলায় টাঙ্গন নদ থেকে চলছে অবৈধভাবে বালু তোলা। এরপর প্রতিদিন অন্তত ২০টি ট্রাক্টরে করে উত্তোলন করা এ বালু অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এতে বর্ষাকালে নদের তীর ও শালবন ভাঙনের শিকার হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
উপজেলার বাজারদেহা-ভবানীপুর গ্রামের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া টাঙ্গন নদের চর ও তলদেশের বালু তোলা হচ্ছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, দুই-তিন মাস ধরে টাঙ্গন নদ থেকে বালু তোলা হচ্ছে। অথচ এই বালু তোলা বন্ধে উপজেলা প্রশাসন এ পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপই নেয়নি। দিনাজপুর বন বিভাগ কর্তৃপক্ষও শালবনের ভেতরের রাস্তা ব্যবহার রোধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
সরেজমিনে ২১ এপ্রিল বিকেলে দেখা গেছে, থুমনিয়া শালবনের ভেতরের রাস্তা দিয়ে শালবনের উত্তর-পশ্চিম দিকে টাঙ্গন নদের ধার ঘেঁষে যাচ্ছে ট্রাক্টরের সারি। শালবন থেকে আধা কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে বাজারদেহা-ভবানীপুর গ্রামের সীমানা বরাবর নদের পশ্চিম তীরে ১০-১৫ একরজুড়ে চর। ওই চর থেকে শ্রমিকেরা বালু তুলছেন। প্রতি পাঁচ-ছয় মিনিট পরপর বালুবোঝাই ট্রাক্টর যাচ্ছে একটি করে।
বালু নিতে আসা বোঁচাগঞ্জ উপজেলার জহুরা অটো রাইস মিলের কর্মচারী আনিসুর রহমান বলেন, ‘ট্রাক্টরপ্রতি দেড় শ টাকা দিয়ে শালবাগানে ঢুকছি।’ কাকে টাকা দেন? জানতে চাইলে বোঁচাগঞ্জের ট্রাক্টরচালক ইমারত হোসেন বলেন, থুমনিয়া শালবনে ঢোকার পথে একটা ঘর আছে, সেখানে থাকা লোককে টাকা দিতে হয়।
ভবানীপুর গ্রামের রেজাউল করিম বলেন, ‘আমি, বাজারদেহা গ্রামের ইসাহাক, মিজানুর রহমান, রুবেলসহ আটজনের একটি দল বাজারদেহা গ্রামের সকিমউদ্দীনের কাছ থেকে তাঁর জমির বালু কিনেছি। এ ছাড়া আমাদের জমির ওপর দিয়ে ট্রাক্টর চলাচল করে। এ জন্য ট্রাক্টরপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা নিই। কেউ এর কমও দেন।’
পীরগঞ্জের সৈয়দপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইকরামুল হক বলেন, ‘বর্ষায় টাঙ্গন নদের স্রোতের ধাক্কায় প্রতিবছর থুমনিয়া শালবনের পশ্চিম পাড় ভাঙছে। এখন শালবনের উজানে যে হারে বালু তোলা হচ্ছে, তাতে নদের দুই পাড়ের আবাদি জমি বর্ষাকালে বিলীন হয়ে যাবে। এর ধাক্কাটা গিয়ে শালবনের ওপরও পড়বে।’ ২২ এপ্রিল বিকেলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও দিনাজপুর বন বিভাগের পীরগঞ্জ বনবিট কর্মকর্তা সফিকুল ইসলামের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
ইউএনও এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, ‘নদ থেকে বালু তোলা বেআইনি। আমি শিগগির প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেব।’