ফেসবুকে স্ট্যাটাস, আ.লীগ নেতার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

.
.

কক্সবাজার শহরের লালদীঘির পাড়স্থ্য পালংক্যি নামের একটি আবাসিক হোটেল থেকে আজ রোববার বিকেলে আওয়ামী লীগ নেতা মো. ঈসমাইলের (৪৮) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সংগঠনবিরোধী কাজ করছেন অভিযোগ করে দলীয় এক নেতার বিরুদ্ধে শনিবার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার পরদিনই তাঁর লাশ উদ্ধার করা হলো

মো. ঈসমাইল বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সদর নাইক্ষ্যংছড়ি ইউনিয়নের মসজিদ পাড়ার গোলাম রসুল মোল্লার ছেলে।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দীপক কুমার সিংহ বলেন, বেলা সাড়ে তিনটার দিকে পালংক্যি হোটেলের ১০৭ নম্বর কক্ষ থেকে বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় ঈসমাইলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। গত শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) তিনি একা হোটেলে ওঠেন।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসেন বলেন, হোটেলের দরজা ভেঙেই পুলিশ আওয়ামী লীগ নেতা ঈসমাইলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে। পারিবারিক ও দলীয় কোন্দল নিয়ে হতাশায় তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন বলে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতার বিরুদ্ধে তিনি গত শনিবার রাত আটটায় নিজের ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস লিখে গেছেন। এসব বিষয়ে তদন্ত চলছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হোটেলের ব্যবস্থাপক মীর কাশেম ও কর্মচারী আবদুস শুক্কুরকে থানায় আনা হয়েছে।

নিহত ঈসমাইলের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের নাম ‘ঈসমাইল মেহেদী’। গতকাল শনিবার তিনি ফেসবুকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শফি উল্লাহকে উদ্দেশ করে স্ট্যাটাস দেন, ‘তুমি সংগঠনের চরম ক্ষতি করেছো। তোমার মধ্যে দেশপ্রেম নেই। বাইশারীর দুইজন সাংবাদিক জানে তুমি আমাকে হুমকি দিয়েছো…।’

এ প্রসঙ্গে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শফি উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, নিহত ঈসমাইলের সঙ্গে তাঁর কোনো ব্যক্তিগত বিরোধ ছিল না। দুই মাস পর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হওয়ার কথা। সেখানে তিনি সভাপতি প্রার্থী আর নিহত ঈসমাইল ছিলেন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী। মাথা খারাপ থাকে বলেই ঈসমাইল নিজের ফেসবুকে তাঁকে নিয়ে মানহানিকর স্ট্যাটাস দেন।

ঈসমাইলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে হাসপাতালের মর্গে ছুটে আসেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী।
মর্গের সামনে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক তসলিম ইকবাল চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ঈসমাইল দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন। হোটেল কক্ষে গলায় ফাঁস লাগিয়ে তাঁর মৃত্যু মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। তিনি নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের দুইবার সাধারণ সম্পাদক ও একবার সহসভাপতি ছিলেন। আসন্ন উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তিনি সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন।