'সম্মাননা ফেরত দেওয়ার অধিকার হামিদ মীরের নেই'

২০১২ সালে সম্মাননা নিতে ঢাকায় এসেছিলেন সৈয়দ আসিফ শাহকার
২০১২ সালে সম্মাননা নিতে ঢাকায় এসেছিলেন সৈয়দ আসিফ শাহকার

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখায় পাকিস্তানি কলামিস্ট ওয়ারিস মীরকে বাংলাদেশের দেওয়া সম্মাননা ফেরত দেওয়ার ঘোষণাকে হতাশাজনক ও রহস্যময় বলে মন্তব্য করেছেন সৈয়দ আসিফ শাহকার। এই সম্মাননা ফেরত দেওয়ার অধিকার হামিদ মীরের নেই বলেও মনে করেন তিনি। সুইডেনপ্রবাসী এই পাকিস্তানিও একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখায় বিদেশি বন্ধু হিসেবে সম্মাননা পেয়েছেন।

ওয়ারিস মীরের ছেলে পাকিস্তানের সাংবাদিক হামিদ মীর গত বৃহস্পতিবার এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে ওই সম্মাননা ফেরত দেওয়ার কথা বলেন। বাবার পক্ষে ঢাকায় এসে সম্মাননা গ্রহণ করেছিলেন হামিদ মীর নিজেই। ওয়ারিস মীরকে ২০১৩ সালের মার্চে সম্মাননা দিয়েছিল বাংলাদেশ। একাত্তরে পাকিস্তানে থেকে গণহত্যার প্রতিবাদকারী আসিফ শাহকার ২০১২ সালে মুক্তিযুদ্ধে বিদেশি বন্ধু হিসেবে সম্মাননা পান। বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ নেওয়ায় জেল-জুলুম সহ্য করে একপর্যায়ে পাকিস্তান থেকে বিতাড়িত হয়ে সুইডেনের নাগরিকত্ব নেন তিনি। সুইডেনের বিচারপতি হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।

আসিফ শাহকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘হামিদ কেন তার বাবার বন্ধুর কাছ থেকে পাওয়া যুদ্ধ সম্মাননাটি ফেরত দিতে চাচ্ছেন? এটা খুবই হতাশাজনক এবং রহস্যময়। এটা খুবই দুঃখের বিষয়। আমি ঠিক জানি না হামিদ মীর কার প্রতিনিধিত্ব করছেন? তাঁর বাবার, যিনি অনেক আগেই মারা গেছেন? এই পুরস্কারটি তাঁর বাবাকে দেওয়া, এটি হামিদ মীরকে দেওয়া হয়নি। তাই এটি ফেরত দেওয়ার কোনো অধিকার হামিদ মীরের নেই। আমি আশা করব, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ মতবিরোধ মিটিয়ে বন্ধুত্বের পথে হাঁটবে। তাদের দুজনেরই একই ধরনের অনেকগুলো শত্রু রয়েছে যেমন: ইসলামি জঙ্গিবাদ, দারিদ্র্য ইত্যাদি। তাদের একসঙ্গে কাজ করা উচিত।’

গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের জিয়ো নিউজের ‘ক্যাপিটল টক’ অনুষ্ঠানে উপস্থাপক হামিদ মীর দাবি করেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ককে তলানিতে নিয়ে গেছেন। আর এই সম্মাননার মাধ্যমে পাকিস্তানিদের ধোঁকা দেওয়া হয়েছে। তাই এই সম্মাননা ফেরত দেওয়া উচিত।

হামিদ মীরের ভাষ্য, সম্মাননা গ্রহণের সময় ভেবেছিলেন, দুই দেশের সম্পর্ক ভালো হবে। কিন্তু সম্পর্ক আরও খারাপ হয়েছে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দায়ী করেন তিনি।