পুণ্যস্নানের মেলায় দর্শনার্থীদের ওপর পুলিশের 'লাঠিপেটা'

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায় ঐতিহ্যবাহী লোহাগাড়া মেলায় দর্শনার্থী ও দোকানিদের ওপর ‘লাঠিপেটা’ করতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কি ও হুড়োহুড়িতে তিন এসআইসহ চার পুলিশ আহত হয়েছেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মেলা শেষ না করায় পুলিশ তা ভেঙে দিতে গেলে দর্শনার্থী ও দোকানিদের ওপর এই লাঠিপেটা ও হুড়োহুড়ির ঘটনা ঘটে।

আহত পুলিশ সদস্যদের সোনাতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সোনাতলা উপজেলার লোহাগাড়া গ্রামে প্রায় এক শ বছর ধরে হিন্দু সম্প্রদায়ের পুণ্যস্নান উপলক্ষে বৈশাখ মাসের তৃতীয় শনিবার মেলা বসে। জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় পুলিশ সন্ধ্যার আগেই মেলা শেষ করার নির্দেশ দেয়। কিন্তু সন্ধ্যার পরও মেলা শেষ না হওয়ায় সোনাতলা থানার পুলিশ রাত নয়টার দিকে মেলা গুটিয়ে নিতে বলে। মেলা পরিচালনা কমিটির লোকজন তা না মানলে পুলিশ রাত সাড়ে নয়টার দিকে মেলাস্থল থেকে দর্শনার্থীদের সরে যেতে ও দোকানিদের দোকান বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। নির্দেশ উপেক্ষা করে মেলা চলতে থাকলে পুলিশ দর্শনার্থীদের লাঠিপেটা শুরু করে। এতে দর্শনার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতি হয়। এ সময় হুড়োহুড়িতে চার পুলিশ আহত হয়।

আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন সোনাতলা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুশান্ত কুমার রায়, হাফিজুর রহমান ও এসআই আনিসুর রহমান এবং কনস্টেবল শাহেব আলী। তাঁদের শনিবার রাতে সোনাতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

এসআই সুশান্ত কুমার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সন্ধ্যার আগেই মেলা গুটিয়ে নেওয়ার কথা থাকলেও রাত নয়টা পর্যন্ত মেলা শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছিল না। বাধ্য হয়ে দোকানি ও দর্শনার্থীদের মেলা থেকে চলে যেতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তাতে কেউ সাড়া না দেওয়ায় লোকজনকে বাঁশি ফুঁকিয়ে সরিয়ে দিতে গেলে দর্শনার্থী ও দোকানিদের সঙ্গে পুলিশের হুড়োহুড়ি বাধে।

সোনাতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, চার পুলিশ সদস্যকে শনিবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁদের শরীরের আঘাত গুরুতর নয়।

সোনাতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, ঘটনা তেমন কিছু নয়, মেলা ভেঙে দিতে গিয়ে একটু হুড়োহুড়ি হয়েছে। কোনো পুলিশ সদস্য হাসপাতালে ভর্তি হননি।