কুষ্টিয়া শহরে রেস্তোরাঁ মালিকদের ধর্মঘট

কুষ্টিয়া শহরে ৫৫টি রেস্তোরাঁয় গত সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু হয়েছে। মে দিবসে রেস্তোরাঁয় শ্রমিকদের কাজ করাকে কেন্দ্র করে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি কুষ্টিয়া শাখার এক কর্মচারীকে মারধরের প্রতিবাদে সংগঠনটি এ ধর্মঘটের ডাক দেয়। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন দূর-দূরান্ত থেকে শহরে আসা সাধারণ মানুষ।
সমিতির সভাপতি আলিমুল হক বলেন, সোমবার সকাল নয়টার দিকে শ্রমিক সংগঠনের কয়েকজন নেতা-কর্মী শহরের মজমপুর এলাকায় জাহাঙ্গীর হোটেলের কয়েকজন কর্মচারীকে হোটেলের ভেতর থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করার চেষ্টা করেন। এ সময় হোটেলের মালিক বাধা দিলে শ্রমিকনেতারা তাঁর ওপরও চড়াও হন। সমিতির অফিস সহকারী মো. স্বপন হোটেলের মালিকের সঙ্গে খারাপ আচরণের প্রতিবাদ করলে শ্রমিকনেতারা উত্তেজিত হয়ে স্বপনকেও কিলঘুষি মারেন। পরে স্বপনকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর শ্রমিকনেতারা পাশের বাগাট মিষ্টান্ন ভান্ডার ও শিল্পী হোটেলে গিয়ে বেশ কয়েক জন শ্রমিককেও কাজ করার অভিযোগে মারধর করেন।
আলিমুন হক বলেন, ‘আমরা শ্রমিকদের জোর করে মে দিবসে কাজে ডাকিনি। তাঁরা নিজেরাই কাজে এসেছিলেন। তারপরও কিছু নামধারী শ্রমিকনেতা এসব কর্মকাণ্ড ঘটাচ্ছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান। আমাদের সমিতিতে ৫৫টি রেস্তোরাঁ রয়েছে। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা না হলে অনির্দিষ্টকাল ধর্মঘট চলবে।’
বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ কুষ্টিয়া জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুল হক গতকাল মঙ্গলবার বলেন, রেস্তোরাঁ মালিকদের কাছে কুষ্টিয়ার ৫০০-৬০০ শ্রমিক জিম্মি হয়ে আছেন। মালিকেরা মে দিবসের দিন শ্রমিকদের দিয়ে জোর করে কাজ করিয়ে নিয়েছেন। শ্রমিকদের মারধর করেছেন। তারপরও তাঁরা রেস্তোরাঁ বন্ধ রেখে মানুষকে জিম্মি করছেন। আমাদের নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র দেওয়া হয় না।’
এদিকে, ছুটির পর গতকাল অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে। তবে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের কোনো রেস্তোরাঁ খোলা ছিল না। দুর্ভোগে পড়েন হাসপাতালে থাকা রোগীদের স্বজনেরা।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার উপমহাপরিদর্শক (চলতি দায়িত্ব) হিমন কুমার সাহা গতকাল দুপুরে বলেন, হোটেল মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে একটা বিরোধ আছে। এটা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো দুই পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিয়ে বসা হচ্ছে।