মে দিবসের কর্মসূচিতে হামলায় আহত ১৬

চুয়াডাঙ্গা শহরে বড় বাজার শহীদ হাসান চত্বরে গত সোমবার মে দিবসে পরিবহন শ্রমিকেরা রয়েল এক্সপ্রেসের একটি বাস ভাঙচুর করেন l প্রথম আলো
চুয়াডাঙ্গা শহরে বড় বাজার শহীদ হাসান চত্বরে গত সোমবার মে দিবসে পরিবহন শ্রমিকেরা রয়েল এক্সপ্রেসের একটি বাস ভাঙচুর করেন l প্রথম আলো

চুয়াডাঙ্গায় গত সোমবার মে দিবসের অনুষ্ঠানে হামলায় অন্তত ১৬ জন পরিবহন ও রেস্তোরাঁর শ্রমিক আহত হয়েছেন। এ ছাড়া একটি বাস ভাঙচুর করা হয়। এ ভাঙচুরের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সোমবার সকাল নয়টার দিকে শহরের টাউন ফুটবল মাঠ থেকে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের অংশগ্রহণে শোভাযাত্রা বের হয়। জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুসের নেতৃত্বে এটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। কিন্তু, শোভাযাত্রার সামনের সারিতে দাঁড়ানো নিয়ে জেলা বাস ট্রাক সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যরা বড় বাজার শহীদ হাসান চত্বরের মুক্তমঞ্চে পৃথক সমাবেশ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সকাল সাড়ে নয়টার দিকে হোটেল শ্রমিকদের একটি দল শহরের কেদারগঞ্জ এলাকায় দুটি রেস্তোরাঁ বন্ধ করতে যায়। ওই সময় হোটেল মালিকের লোকজনের সঙ্গে তাঁদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে জেলা হোটেল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. বাবলু হোসেন, রেস্তোরাঁর শ্রমিক কামাল হোসেন, বিল্লাল হোসেন, মো. জনি, শাহাবুদ্দীন ও ইয়াছিন হোসেন আহত হন। খবর পেয়ে সদর থানার পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে পরিবহন শ্রমিকদের সমাবেশ চলাকালে বড় বাজার শহীদ হাসান চত্বর দিয়ে রয়েল এক্সপ্রেস পরিবহনের একটি বাস যাওয়ার সময় শ্রমিকেরা সেটি ভাঙচুর। এতে ওই বাসের সামনের ও জানালার কাচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাসচালক পল্লব ঘোষ, তাঁর সহকারী মো. বাবলু ও শ্রমিক উজ্জ্বল হোসেন আহত হন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শহরতলির দৌলাতদিয়াড়ে রয়েল এক্সপ্রেসের আরও সাতজন শ্রমিককে মারধর করা হয়। আহত লোকজনকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। বাস ভাঙচুর ও পরিবহন শ্রমিকদের ওপর হামলার ঘটনা জানাজানি হলে শহরজুড়ে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরিবহন শ্রমিকেরা দুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন।
রয়েল এক্সপ্রেসের স্বত্বাধিকারী এনামুল হক দাবি করেন, ভাঙচুরের কারণে দেড় লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। শ্রমিকেরা ঈর্ষান্বিত হয়ে তাঁর মালিকানাধীন বাস ও শ্রমিকদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। ওই সময় গাড়িতে কোনো যাত্রী ছিলেন না। শ্রমিকেরা বাস নিয়ে দামুড়হুদা উপজেলার গোপালপুরে মে দিবস উপলক্ষে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশ ও প্রীতিভোজে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন।
জেলা বাস ট্রাক সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এম জেনারেল ইসলামের ভাষ্য, রয়েল এক্সপ্রেস ভাঙচুর ও শ্রমিকদের ওপর হামলার ঘটনায় তাঁর সংগঠনের কোনো শ্রমিক জড়িত নন। পৃথক সমাবেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শ্রমিকদের নিজস্ব কিছু দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে আলোচনা থাকায় এবার হাসান চত্বরে সমাবেশ করা হয়েছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোজাম্মেল হক বলেন, বাস ভাঙচুর ও পরিবহন শ্রমিকদের ওপর হামলার ঘটনায় রয়েল এক্সপ্রেসের মহাব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।