যুক্তরাজ্যে রপ্তানি হবে নবাবগঞ্জের আম

দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলা থেকে চলতি মৌসুমে আম যুক্তরাজ্যে রপ্তানি হতে যাচ্ছে। এ জন্য ১৫ জন আমচাষির সঙ্গে চুক্তি করেছে কৃষি বিভাগ। আজ রোববার বিদেশি ক্রেতাদের একটি দল আমবাগান পরিদর্শন করবে।
মৌসুমের শুরু থেকেই নিরাপদ আম উৎপাদনে মাহমুদপুর ফলচাষি সমিতি ও উপজেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এ কাজে সহায়তা করছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ উদ্যানতত্ত্ব গবেষণাকেন্দ্র। কর্মসূচির মধ্যে আছে চাষিদের আমের উন্নত জাত সম্পর্কে ধারণা দেওয়া, প্রাকৃতিকভাবে আম চাষের প্রশিক্ষণ, কৃষি প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা দেওয়া, কীটনাশকের পরিমিত ব্যবহারে প্রচারণা এবং আমের মুকুল থেকে শুরু করে আম সংগ্রহ পর্যন্ত বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণ। এ ছাড়া ফ্রুট ব্যাগিং করা হবে প্রায় পাঁচ লাখ আমের। ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমচাষিদের প্রশিক্ষণ এবং নিরাপদ আম উৎপাদনের উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ বছর নবাবগঞ্জে প্রায় ১ হাজার চাষির ৮০২ হেক্টর জমিতে আমবাগান রয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্য ২৩ হাজার ৫৫৬ মেট্রিক টন। মাটি ও আবহাওয়ার কারণে এই এলাকার আম বেশ সুস্বাদু। স্থানীয়ভাবে চাহিদা মিটিয়ে এখানকার আম ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনাসহ সারা দেশেই যাচ্ছে। বিশেষত মাহমুদপুর এলাকার আম গুণে-মানে সেরা। এবার আম চাষে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহার করায় আমের রং ও গুণগত মান বাড়বে। মাহমুদপুরে হিমসাগর, হাঁড়িভাঙা, ল্যাংড়া, আম্রপালি, বারি-৪, রুপালিসহ প্রায় ১৫ প্রজাতির আমের চাষ হচ্ছে। মৌসুমের শুরুতেই গাছ পরিষ্কার করে উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে শুরু হয় আমের প্রাথমিক পরিচর্যার কাজ। নির্দেশনামতো গাছের যত্ন নিচ্ছেন চাষিরা। কীটনাশক ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক উপায়ে পোকা নিধন করা হচ্ছে। আমে রাসায়নিকের ব্যবহার বন্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে মাহমুদপুর সমবায় সমিতি ও উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু রেজা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘এখানকার আম যুক্তরাজ্যে রপ্তানি হবে। বিদেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ওয়ালমার্টের একটি প্রতিনিধিদল রোববার আমবাগান পরিদর্শন করবে। জুনের মাঝামাঝি বাগান থেকে আম ওঠা শুরু হবে।
আম রপ্তানিতে যে ১৫ জন কৃষকের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে, তাঁরা মাহমুদপুর ফলচাষি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সদস্য। এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আম উৎপাদনের প্রযুক্তি সম্পর্কে এখানকার মানুষ বেশি কিছু জানত না। এখন প্রশিক্ষণ নিয়ে নিরাপদ আম উৎপাদন করা হচ্ছে। আম রপ্তানির বিষয়ে কৃষকেরা খুশি। এতে এই এলাকার কৃষি উন্নয়নে এক নতুন দিগন্ত তৈরি হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বজলুর রশীদ বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমচাষিদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। এ বছর নবাবগঞ্জে আম মেলার মাধ্যমে এ উপজেলার আম চাষের সাফল্য ও সম্ভাবনা তুলে ধরে দেশ-বিদেশের ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।