চিকিৎসা সরঞ্জামের মূল্য ঠিক করতে কর্তৃপক্ষ গঠন করুন

রাজধানীতে একটি গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা বলেছেন, একাধিক চক্র হৃদ্‌রোগের চিকিৎসার জরুরি উপকরণ স্টেন্ট (রিং) নিয়ে অনৈতিক বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। এটি বন্ধ হলে হৃদ্‌রোগীরা মানসম্মত চিকিৎসা পাবেন। জীবন রক্ষাকারী সব ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের আদর্শ মূল্য নির্ধারণের লক্ষ্যে একটি কর্তৃপক্ষ গঠনসহ সরকারের কাছে সাত দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয় গোলটেবিল বৈঠকে।

গতকাল শনিবার পান্থপথের এসইএল সেন্টারে আয়োজিত ওই গোলটেবিল বৈঠকের শিরোনাম ছিল ‘চিকিৎসাসেবায় মেডিকেল ডিভাইসের মূল্য নির্ধারণ: বর্তমান প্রেক্ষাপট ও করণীয়’। হেলথ কনজ্যুমার রাইটস ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত এই আলোচনায় সহযোগিতা করে নয়টি বেসরকারি সংস্থা।

অনুষ্ঠান হেলথ কনজ্যুমার রাইটস ফোরামের আহ্বায়ক ইবনুল সাঈদের সঞ্চালনায় আলোচনায় একই সংগঠনের উপদেষ্টা (অনারারি) রফিকুল ইসলাম মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন। এতে বলা হয়, দেশে করোনারি স্টেন্ট ৫০ হাজার থেকে আড়াই লাখ টাকায় বিক্রি হলেও ভারতে এটির মূল্য ৮ হাজার ৯২৯ থেকে সর্বোচ্চ ৩৬ হাজার ৮০৪ টাকা।

মূল প্রবন্ধে বলা হয়, স্টেন্ট সরবরাহকারী ২৭টি প্রতিষ্ঠানসহ একটি চক্র এটির বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রতিটি স্টেন্টের বিপরীতে ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে কমিশন নেওয়া হয়। গত বছর জাতীয় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল ৫৪ লাখ টাকা মূল্যের স্টেন্ট কিনলেও নির্ধারিত সময়ে সেগুলো রোগীদের পরানো না হওয়ায় তা মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যায়। বোঝা যায়, শুধু বাণিজ্য করার উদ্দেশ্যে বিনা মূল্যের ওই স্টেন্ট গরিব রোগীদের দেওয়া হয়নি। প্রবন্ধে বলা হয়, সম্প্রতি অধিদপ্তর ৪৭ ধরনের স্টেন্টের মধ্যে ৩৪টির খুচরা মূল্য বেঁধে দিলেও তা যথেষ্ট নয়।

হেলথ কনজ্যুমার রাইটস ফোরাম সরকারের কাছে সাত দফার সুপারিশ তুলে ধরে। এর মধ্যে আছে জীবন রক্ষাকারী সব ওষুধ ও মেডিকেল ডিভাইসের আদর্শ মূল্য নির্ধারণের লক্ষ্যে অবিলম্বে ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যালস অ্যান্ড মেডিকেল প্রাইসিং অথোরিটি গঠন এবং অনৈতিক স্টেন্ট বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত ২১টি প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন চক্রের হোতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।

গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) শাহাদত হোসেন বলেন, চিকিৎসা নিতে গিয়ে আর কেউ প্রতারিত হবে না—সবাইকে এই অঙ্গীকার করতে হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ এশিয়ার সাবেক আঞ্চলিক উপদেষ্টা অধ্যাপক মোজাহেরুল ইসলাম বলেন, এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের নীতি-নৈতিকতার মধ্যে থেকে ওই ব্যবসা থেকে সরে আসতে হবে।

থিওলজিক্যাল সোসাইটির সভাপতি আলমাছুর রহমান বলেন, আইন করে স্টেন্টের দাম ঠিক করতে হবে।