বাল্যবিবাহ ঠেকিয়ে ছাত্রীকে স্কুলে নিয়ে গেল শিক্ষার্থীরা

সুনামগঞ্জের ধরমপাশায় গত বছর নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীর (১৪) বাল্যবিবাহ ঠেকিয়ে দিয়ে উপজেলা প্রশাসন থেকে সম্মাননা পেয়েছিল তার সহপাঠীরা। গতকাল সোমবার আবার একই বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর (১২) বাল্যবিবাহ ঠেকিয়েছে একই বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণির ২০ শিক্ষার্থী।

মধ্যনগর পাবলিক বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর সঙ্গে ধরমপাশা উপজেলা সদরের এক যুবকের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কনের এক সহপাঠীর মাধ্যমে খবরটি পান বিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক মোফাচ্ছেল হোসেন। তিনি খবরটি গতকাল সকাল সাড়ে আটটার দিকে তাঁর কাছে পড়তে আসা কয়েকজন ছাত্রীকে জানান। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে দশম শ্রেণির ছাত্রী হরি প্রিয়া সেন প্রধান শিক্ষককে জানায়। সেই সঙ্গে স্কুলে আসা কিছু ছাত্রীকে এ বিয়ে বন্ধ করতে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সংগঠিত করা হয়। বিদ্যালয় থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে কনের বাড়িতে যেতে প্রধান শিক্ষক মো. নূরুল ইসলাম তাদের একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা ভাড়া করে দেন। সাড়ে ১০টার দিকে ২০ জন ছাত্রী কনের বাড়ি যায়। তারা মেয়েটির মাকে বাল্যবিবাহের কুফল এবং ১৮ বছরের আগে মেয়ের বিয়ে দিলে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হওয়ার কথা জানায়। এরপর তারা মেয়েটিকে বাল্যবিবাহ দেবেন না মর্মে মায়ের কাছ থেকে অঙ্গীকারনামায় টিপসই নিয়ে মেয়েটিকে সঙ্গে নিয়ে বিদ্যালয়ে চলে যায়। দুপুরে চামরদানী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও মধ্যনগর থানার পুলিশকে বিষয়টি জানায় তারা। এ সময় চেয়ারম্যান ও পুলিশ মেয়েটির বাল্যবিবাহ বন্ধের আশ্বাস দিলে ছাত্রীদের মধ্যে স্বস্তি ফেরে।

ইউপির চেয়ারম্যান জাকিরুল আজাদ বলেন, ‘ছাত্রীদের কাছ থেকে বাল্যবিবাহ আয়োজনের খবর পেয়ে কাজিকে এ বিয়ে না পড়ানোর জন্য বলেছি। মেয়েটির বাবা মেয়েকে ১৮ বছরের আগে বিয়ে দেবেন না বলে অঙ্গীকার করেছেন।’

প্রধান শিক্ষক মো. নূরুল ইসলাম বলেন, ‘বাল্যবিবাহ বন্ধে ছাত্রীদের উৎসাহ ও সচেতনতাবোধ দেখে আমি অভিভূত। দ্বিতীয়বারের মতো আমার বিদ্যালয়ের আরও একজন ছাত্রী বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পাওয়ায় খুব ভালো লাগছে।’