আস্তানা থেকে বেরিয়ে কুপিয়ে হত্যা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীকে

.
.

মাটি–টিনের বেড়া আর টিনের ছাউনির বাড়িটার চারপাশে ফাঁকা ধানখেতে। জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে গতকাল বুধবার রাত থেকেই ঘিরে রাখে পুলিশ। সকালের দিকে হঠাৎ করেই আস্তানা থেকে বের হয়ে আসেন নারী-পুরুষসহ বেশ কয়েকজন। তাঁরা পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমার বিস্ফোরণ ঘটান, কুপিয়ে হত্যা করেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্য আবদুল মতিনকে (৪৫)। এ সময় পুলিশ গুলি চালায়। পরে ‘আত্মঘাতী বিস্ফোরণে’ পাঁচ জঙ্গি নিহত হন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় একজন সাংবাদিক বলেন, বাড়িটি পুলিশ ঘিরে রাখা অবস্থায় সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে ধারালো অস্ত্র, শাবল ও বল্লম হাতে কয়েকজন নারী-পুরুষ সেখান থেকে বের হয়ে ধানখেতে অবস্থান নিয়ে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দিকে ছুটে যান। তাঁরা কয়েকটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটান। এ সময় একজন নারী ও একজন পুরুষ মিলে ফায়ার সার্ভিসের সদস্য আবদুল মতিনকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। পাশে থাকা পুলিশ গুলি ছুড়েও তাঁদের নিবৃত্ত করতে পারেনি। জঙ্গিরা পুলিশের দিকেও ধেয়ে আসার চেষ্টা করেন। পুলিশ গুলি করে তাঁদের প্রতিরোধ করে। এর মধ্যেই হামলাকারী জঙ্গিরা সবাই আত্মঘাতী বিস্ফোরণে নিহত হন বলে পুলিশ জানায়।

পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, জঙ্গি আস্তানাগুলোতে যেহেতু প্রচুর বিস্ফোরক থাকে, তাই অভিযানের সময় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের সঙ্গে রাখা হয় পানি ছিটানোর জন্য। এ ছাড়া দরজা-জানালা ও দেয়াল ভাঙতেও তাঁরা সহায়তা করেন। প্রাথমিক চিকিৎসার ক্ষেত্রেও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সহায়তা করেন। এ ধরনের প্রাণরক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, তা বীভৎস।

আবদুল মতিনের বাড়ি গোদাগাড়ীর মাটিকাটায়। তাঁর লাশ রাজশাহী মেডিকেল কলজে হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। মর্গ সূত্র জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তির শরীরে, বিশেষ করে মাথায় কোপের অনেকগুলো গভীর ক্ষত রয়েছে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তাঁর বাঁ কানটি প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

জঙ্গিদের হামলা ও বিস্ফোরণে আহত চার পুলিশ সদস্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুটি ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন। তাঁদের কারও কারও শরীরে বোমার স্প্লিন্টারের আঘাত রয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে।